বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সাংবাদিকরা এক কাতারে এসে প্রেসক্লাবের ইতিহাসে এমন পরিপূর্ণ এবং অনিন্দ সুন্দর মাত্রায় অনুষ্ঠান আয়োজন এই প্রথম। প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের নিরন্তর এবং প্রাণান্তকর চেষ্টায় শুক্রবার (২৪ফেব্রুয়ারি) নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন লেকে পরিণত হয় বার্ষিক বনভোজনকে ঘিরে উচ্ছ্বাস আনন্দময় এক মিলনমেলা। সাংবাদিক পরিবারের শিশু-কিশোরসহ শতাধিক মানুষের পদভারে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে শৈলশোভা লেকের গোটা অঙ্গন।
অনুষ্ঠানের পরিপূর্ণতা আসে তখনই, যখন নাইক্ষ্যংছড়ি জোন ও ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল মো.আনোয়ারুল আযীম অনুষ্ঠানস্থলে এসে শ্যূটিং প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। তবে সকাল সাড়ে ১১টায় সাংবাদিকদের প্রীতি ফুটবল খেলায় অংশ নেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক মো.শফিউল্লাহ ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তসলিম ইকবাল চৌধুরী। এর পর অনুষ্ঠানে যোগ দেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, নারী ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা চৌধুরী, বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী, গীতিকার অপু বড়–য়া প্রমূখ।
বেলা ১২টায় সাংবাদিকদের সাতার প্রতিযোগিতা আর দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হয় সাংবাদিক সহধর্মীনি ও অংশগ্রহণকারী নারীদের বালিশ খেলা। এই দুটি প্রতিযোগিতা শেষে মধ্যহ্নভোজে মিলিত হন সবাই। খাবারের পর্ব শেষে আরম্ভ হয় ইয়ারগান ব্যবহার করে বেলুন ফেটে পুরস্কার জেতার পালা। বিকাল সাড়ে তিনটা থেকে সন্ধ্যা নাগাদ সকলেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মাতোয়ারা হয়ে উঠেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা থেকে মঞ্চ থেকে সুরেলা কণ্ঠে দর্শক-শ্রোতাদের বিমোহিত করে তুলে স্থানীয় কণ্ঠ শিল্পীরা। অংশগ্রণকারীরা বাদ্য আর কণ্ঠের তালে তালে দোলে উঠে। ভালোলাগার পূর্ণাঙ্গ এক আবহ তৈরি হয় লেক জুড়ে। র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠানে কৌতুকমধুর উপস্থাপনায় বিজয়ীদের মাঝে বিতরণ করা হয় আকর্ষণীয় সব পুরস্কার। অনেকেই টিকেট কেটে মনের মতো পুরস্কার পেয়ে যেমন আনন্দে ভেসেছে, না পেয়েও কারো হৃদয় ভাঙ্গার কষ্ট জেগে উঠেনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি শামীম ইকবাল চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো.আবুল বাশার নয়নের প্রানবন্ত পরিচালনায় স্বপরিবারের সাংবাদিকদের মধ্যে বনভোজনে অংশ নেন প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মাঈনুদ্দিন খালেদ, উপদেষ্টা তসলিম ইকবাল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মো.ইফসান খাঁন ইমন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হক বাহাদুর, বর্তমান সহ-সভাপতি আবদুল হামিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কাজল, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, দপ্তর ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন টুক্কু, ক্রীড়া ও পাঠাগার সম্পাদক আবদুর রশিদ, সহ ক্রীড়া ও পাঠাগার সম্পাদক মোহাম্মদ শাহীন, নির্বাহী সদস্য মুফিজুর রহমান, সানজিদা আক্তার রুনা, সদস্য মোহাম্মদ তৈয়ব উল্লাহ, এম.আবু শাহমা, মোহাম্মদ ইউনুছ ও বাইশারীর সংবাদকর্মী এম হাবিবুর রহমান রনি।
বালিশ খেলা প্রতিযোগিতায় সাংবাদিক মাঈনুদ্দিন খালেদের মেয়ে নাজিয়া প্রথম, সাংবাদিক আবদুল হামিদের স্ত্রী মোকাররমা হামিদ দ্বিতীয় এবং সাংবাদিক হাফিজুল ইসলাম চৌধুরীর মা আয়েশা খানম চৌধুরী তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। সাতার প্রতিযোগিতায় সাংবাদিক মুফিজুর রহমান প্রথম, তৈয়ব উল্লাহ ও আমিনুল ইসলাম যৌথভাবে দ্বিতীয় এবং মোহাম্মদ ইউনুছ তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। শ্যূটার গান প্রতিযোগিতায় বেলুন ফেটে পুরস্কার লাভ করেন বিজিবির জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল মো.আনোয়ারুল আযীম, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক তসলিম ইকবাল চৌধুরী, সাংবাদিক শামীম ইকবাল চৌধুরী, আবদুল হামিদ, জাহাঙ্গীর আলম কাজল, হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুর রশিদ, তৈয়ব উল্লাহ, মুফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ শাহীন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে তাঁদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
সুন্দর ছড়া আবৃত্তির জন্য সাংবাদিক আবুল বাশার নয়নের মেয়ে সুমাইয়া জাহান ও সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম কাজলের ছেলে তুহিনকে এবং গানের জন্য অতিথি শিল্পী বিজিবি সদস্য জয়নালের মেয়ে শোভাকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এসময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনকারী স্থানীয় শিল্পী বাহাদুর, উষা ও আতিকুর রহমানকেও পুরস্কিত করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।