৪ মে, ২০২৫ | ২১ বৈশাখ, ১৪৩২ | ৫ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  শ্রমিক দিবসে সামাজিক সংগঠন “মানুষ” এর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ   ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১

নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন অরণ্য ছাগলখাইয়ায় অপহৃতরা ৮ দিনেও উদ্ধার হয়নি

মুফিজুর রহমান,(নাইক্ষ্যংছড়ি): আট দিন পরও উদ্ধার হয়নি নাইক্ষ্যংছড়ির গহীন অরণ্য দৌছড়ি ইউনিয়নের ছাগলখাইয়া এলাকার নিজ বাড়ী থেকে অপহৃত মোহাম্মদ হোছন ও নুরুল আজিম।
অপহরণের পর থেকে দুর্গম পাহাড়ে পুলিশ-বিজিবির অভিযান অব্যাহত আছে। আট দিন গত হলেও উদ্ধার না হওয়ায় অপহৃতদের পরিবারের মাঝে নানা আতংক বিরাজ করছে এবং দিন কাটছে উৎকন্ঠায়। স্ত্রী-পুত্র, মা-বাবার কান্নায় আকাশ, বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। তারা শঙ্কায় রয়েছেন যদি তাদের হত্যা করে ফেলে। তাদের হাতে টাকাও নাই, কোন রকম অল্প কিছু টাকা দ্বার কর্জ্ব করে যোগাড় করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
অপহৃত মোঃ হোছনের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, অপহরণের দুইদিন পর মোবাইল ফোনে তার স্বামীর মুক্তিপনের জন্য ৪ লাখ টাকা দাবী করেছিল। গত রবিবারও একইভাবে টাকা দাবী করে এবং না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। বৃদ্ধ পিতা ফয়েজ আহাম্মদ কান্নারত অবস্থায় বলেন, তারা কৃষি কাজ করে কোন রকমে ঘর সংসার চালায়। এত টাকা কোথায় পাবে এবং ছেলেকে কিভাবে জিম্মি দশা থেকে মুক্তি করে আনবে। এ কথা বলে তিনি বিলাপ করে কাঁদতে থাকেন।
অপহৃত নুরুল আজিমের স্ত্রী ইছমত আরা বলেন, স্বামীর মুক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে সন্ত্রাসীরা। অন্যথায় তাকেও হত্যা করা হবে। অপহৃত নুরুল আজিমের বড় ভাই আমির হোছন জানান, তারা অত্যন্ত গরীব। এত টাকা কোথায় পাবে। কোন রকমে মানুষের জমি বর্গা চাষ করে তাদের সংসার চলে।
সরজমিনে গিয়ে দুর্গম দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগল খাইয়া গ্রামে অপহৃতদের আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অপহরণের পর থেকে দুর্গম পাহাড়ে পুলিশ-বিজিবির অভিযান অব্যাহত আছে। তারপরও ৮ দিন যাবত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মাঝে উৎকন্ঠায় দিন কাটছে। স্ত্রী-পুত্র, মা-বাবার কান্নায় আকাশ, বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। তারা শঙ্কায় রয়েছেন যদি তাদের হত্যা করে ফেলে। তাদের হাতে টাকাও নাই, কোন রকম অল্প কিছু টাকা দ্বার কর্জ্ব করে যোগাড় করেছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। আজ দীর্ঘ ৭দিন পার হলেও তাদের উদ্ধার সম্ভব হয়নি ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রেহেনা আক্তার জানান, অপহৃত দুইজনের উদ্ধারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা মাঝের মধ্যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুইজনের জন্য ৭ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবীর কথা তিনি তাদের পরিবারের নিকট শুনেছেন।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার নবাগত ইনচার্জ মোঃ আলমগীর শেখ এর নিকট মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ-বিজিবির অভিযান অব্যাহত রায়েছে এবং সম্ভাব্য স্থানগুলো ঘেরাও পূর্বক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অচিরেই অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব বলে তিনি আশা করছেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়ী থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগলখাইয়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ হোছন (৪২) ও নুরুল আজিম (৩২) কে ৮/১০ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি দল অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের দুইদিন পর অপহৃতদের মোবাইল থেকে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের নিকট ৭ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে আসছিল সন্ত্রাসীরা। টাকার পরিমাণ কম হলেও এবং যথাসময়ে টাকা পরিশোধ না করলে তাদের হত্যা করা হবে বলেও মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে আসছিল সন্ত্রাসীরা।
এছাড়া বিগত দিনেও দোছড়ি ইউনিয়নের বাঁকখালী মৌজার ছাগল খাইয়া থেকে ৬জন তামাক চাষী অপহরণ করেছিল সন্ত্রাসীরা। তাদেরকে মুক্তিপনের বিনিময়ে সন্ত্রাসীরা ছেড়ে দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।