২২ অক্টোবর, ২০২৫ | ৬ কার্তিক, ১৪৩২ | ২৯ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন পরিবার, চার সন্তান স্কুলে যাওয়া বন্ধ   ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ

দেশে কঠিন হালত অতিক্রম করছে সংলাপ ছাড়া এ হালত পরিবর্তন সম্ভব নয়

Coxs Shane Resalot Sommelon
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ঈদগাঁও মাঠে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী শানে রেসালাত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেছেন-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশ কঠিন হালত অতিক্রম করছে। সংলাপ ছাড়া এ হালত পরিবর্তন সম্ভব নয়। যারা ইসলাম মেনে চলে তাদের জীবনে সংকট তৈরি হয়না। ইসলামই জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। অন্য কোন তন্ত্র-মন্ত্রে শান্তি আসা করা যায়না। আমরা যদি ইসলামকে প্রকৃত অনুসরণ করে চলি তাহলে সমাজে হানাহানি, রক্তপাত, গুম-খুন থাকবেনা। দেশের নেতৃত্ব যাদের হাতে তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় না থাকার কারণে যে কোনো অন্যায়, অনাচার, পাপাচার ও জুলুম নিপীড়ন করতে তারা কুণ্ঠাবোধ করছেনা। এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই মুসলমানদেরকে খোদাভীরু নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি বলেন-নাস্তিক, মুরতাদ ও ধর্মদ্রোহীরা মহান আল্লাহ ও তার রাসূল (সা:) এর শানে বেয়াদবি করছে। আমরা তা সহ্য করতে পারিনা। আল্লাহর জমিনে নাস্তিকদের থাকার স্থান নেই। তাই নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে আমাদের আজীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন-ইসলামের মৌলকি স্তম্ভ হলো পাঁচটি। যারা এ পাঁচ স্তম্ভ মেনে চলে তারা আস্তিক। যারা মানেনা তারা নাস্তিক। নামায সকল কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতি থেকে মানুষকে বিরত রাখে। তাই মুসলমানদের ঘরে ঘরে নামাজি সৃষ্টি করতে হবে। তাহলেই পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি আসবে। তাই তিনি সর্বস্তরের মুসলমানদেরকে প্রকৃত মুমিন ও নামাজি হওয়ার আহ্বান জানান।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন- বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় কতিপয় ইসলামবিদ্বেষী মুরতাদ ও নাস্তিক রয়েছে, যারা ইসলামী বিধিবিধান ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে বিদ্বেষপ্রসূত মন্তব্য ও বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। ইসলামের মৌলিক ফরজ বিধান পর্দা বা হিজাব পরাকে কটাক্ষ করে ইতোপূর্র্বে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে। ‘সুদে’র মতো আল্লাহ প্রদত্ত হারাম বিধানকে অবৈধ নয় বলে অর্থমন্ত্রী পবিত্র কোরআনের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে উপর্যুপরি আঘাত করে তারা আলেমসমাজ ও তৌহিদি জনতাকে ক্ষিপ্ত করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। এদেরকে প্রতিরোধ করা আমাদের সকলের ঈমানি দায়িত্ব। এইসব ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমরা দেশের সর্বস্তরের ওলামা-পীর-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতাকে এগিয়ে আসতে হবে।
বাবুনগরী আরও বলেন-ইসলামের নামে দেওয়ানবাগী ও রাজারবাগী নামে নানা ভ্রান্ত মতাদর্শ প্রচার করে মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্ত ছড়ানো হচ্ছে। তিনি এসব বিভেদ সৃষ্টিকারী ভ্রান্ত মতবাদ থেকে মুসলমানদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
শায়খুল হাদিস আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী বলেন-রাজনৈতিক অহমিকায় আক্রান্তরা সংবিধান থেকে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তুলে দিয়ে জাতিকে হানাহানি ও চরম বিভক্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এর প্রতিবাদে টানা অবরোধ ও হরতালে দেশ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। এভাবে আর চলতে দেয়া যেতে পারেনা। দেশে মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার বলতে কিছুই নেই। ইসলাম সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছে।
আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন-চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটকে ভিন্ন দিকে ফেরানোর জন্য নতুন করে নিরীহ আলেমসমাজ ও কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের জড়িয়ে কথিত অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তার নাটক তৈরি করে জঙ্গিবাদের কল্পকাহিনী সাজানো হচ্ছে। একশ্রেণির চিহ্নিত মিডিয়া ও একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর যৌথ কারসাজিতে এর আগেও অসংখ্যবার এমন অপপ্রয়াস আমরা লক্ষ করেছি। জঙ্গিবাদের জিগির তুলে তারা দেশের আলেমসমাজ ও মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদেরকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে কলঙ্কিত করতে এবং মাদ্রাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করতে নানা ধরনের ফলস ফ্ল্যাগ অভিযান ও নাটক বানিয়ে থাকে।
মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, দেশের আলেম ওলামা, মসজিদের ইমাম ও কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতা কারও বিরুদ্ধে কোন সন্ত্রাস ও দুর্নীতির প্রমাণ নেই, যারা দুর্নীতি করে সবাই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বা দেশের এমপি মিনিষ্টাররা। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে দেশের সর্বোচ্চ এসব ডিগ্রিধারীরা দুর্নীতিতে লিপ্ত হচ্ছে।
মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেন-ইসলামে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। আলেম ওলেমারা বা মাদ্রাসার কোন ছাত্র সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত নয়।
বিভিন্ন অধিবেশনে বিভক্ত শানে রেসালত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন-হেফাজতে ইসলাম কক্সবাজার জেললা সভাপতি মাওলানা আবুল হোসেন, মাওলানা মোহাম্মদ সুহাইব নোমানী, মুফতী এনামূল হক, মাওলানা আমান উল্লাহ সিকদার, মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা শেখ সোলাইমান, মাওলানা মসরুর আহমদ।
দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত শানে রেসালত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন-হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে আমীর দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশে নায়েবে আমীর আল্লামা তাফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, জামেয়া ইসলামী পটিয়ার প্রধান মুফতী আল্লামা মোজাফফর আহমদ, প্রধান বক্তা ছিলেন-হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী, বক্তব্য রাখেন-যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, আল্লামা সাজেদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, ঢাকা মহানগরী যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, মাওলানা মুজিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব ওসমানী, মাওলানা সৈয়দ আলম আরমানী, মাওলানা ওলি আহমদ, মাওলানা মোস্তফা নুরী, মাওলানা জসিম উদ্দিন মিছবাহ, মাওলানা মুফতী হেলাল উদ্দিন, মাওলানা কলিম উল্লাহ, মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সাইফী, সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-আল্লামা সরওয়ার কামাল আজিজি, মাওলানা হাফেজ ছালামত উল্লাহ, মাওলানা নুরুল আলম আল মামুন, মাওলানা মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। সম্মেলনে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন-কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন হাবিব।
শানে রেসালত সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মাওলানা কাজী এরশাদ উল্লাহ ও মাওলানা সোহাইল।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।