১৩ মে, ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৪ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  তরুণ সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ সোহরাব হোসেন ডলার: এক প্রতিশ্রুতিশীল পথচলা   ●  উখিয়ার প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী ফরিদ আহম্মদ চৌধুরীর ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  কক্সবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক ডালিম’র সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ   ●  শ্রমিক দিবসে সামাজিক সংগঠন “মানুষ” এর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ   ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র

দরপত্র ছাড়াই কোটি টাকার বই কিনছে গ্রন্থকেন্দ্র

দরপত্র ছাড়াই একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেক বেশি দামে এক কোটি টাকার বই কিনছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির নেতারা বলছেন, একটি অর্থবছরে সৃজনশীল বই কেনার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বাজেট ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শুধু পাঠক সমাবেশ থেকেই এক কোটি টাকার ‘রবীন্দ্র-সমগ্র’ কিনছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেশের আরও বেশ কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রবীন্দ্র-সমগ্র বের করে। কিন্তু কোনো ধরনের প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়াই ২৫ খণ্ডের রবীন্দ্র-সমগ্র কেনার জন্য পাঠক সমাবেশকে একক উৎস বিবেচনার জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রকে আদেশ দিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এই ধরনের কেনাকাটা গ্রন্থকেন্দ্র করে থাকে। আশা করছি তারা নিয়মের মধ্যে থেকেই কিনবে।’
জানা গেছে, পাঠক সমাবেশ ২৫ খণ্ডের রবীন্দ্র-সমগ্র প্রতি সেট ৪৫ হাজার টাকা করে রাখছে। দেশের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো এর চেয়ে কম মূল্যে খুচরা বাজারে রবীন্দ্র-সমগ্র সরবরাহ করে থাকে। বিশ্বভারতীর পূর্ণাঙ্গ রবীন্দ্র-সমগ্র ভারতীয় মূল্যে ৪ হাজার ৮০০ রুপিতে বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশে খুচরা বাজারে এটি ৯ থেকে ১০ হাজার টাকায় পাওয়া যায়।
বাংলাবাজারকেন্দ্রিক প্রকাশনা সংস্থা সালমা বুক ডিপোর অন্যতম কর্ণধার মহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁদের বাজারজাত করা পূর্ণাঙ্গ রবীন্দ্র-সমগ্রের (১৮ খণ্ড) দাম নয় হাজার টাকা। তবে তাঁরা ছাড় দিয়ে ৬ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি করেন।
আরেক প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্যর প্রধান নির্বাহী আরিফুর রহমান বলেন, তাঁরা ৩০ খণ্ডে সমগ্র রবীন্দ্র-রচনাবলী বিক্রি করেন ২৪ হাজার টাকায়। চলতি সপ্তাহে বিশেষ ছাড়ে তাঁরা ১৮ হাজার টাকায় এটি বিক্রি করছেন।
এই ব্যাপারে পাঠক সমাবেশের উদ্যোক্তা শহিদুল ইসলামের (বিজু) বক্তব্য জানতে কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর সব কটি মুঠোফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহবাগের পাঠক সমাবেশে গেলে সেখানকার একজন কর্মী বলেন, শহিদুল ইসলাম কলকাতায় গেছেন।
কোনো রকমের দরপত্র আহ্বান না করেই শুধু একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ের বই কেনার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের অন্য প্রকাশকেরা। বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গণি বলেন, বই যদি কিনতেই হয়, তবে দরপত্রের মাধ্যমেই কিনতে হবে। কোনো রকমের প্রতিযোগিতা ছাড়া এভাবে এত বিশাল পরিমাণের বই কেনা অযৌক্তিক। তিনি আরও বলেন, ‘আমার জানামতে, গেল বছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বই কেনার সিদ্ধান্তের বিষয়ে। তিনি আপত্তি জানালেও পরবর্তী সময়ে তা মানা হয়নি।’
কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়া একক প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি টাকার বই কেনার কারণ জানতে চাইলে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এক মাস আগে যোগ দিয়েছি। যোগ দিয়েই জানতে পারি, একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এক কোটি টাকার বই কেনা হচ্ছে। আমি আসার আগেই বিষয়টা চূড়ান্ত হয়েছে।’ তিনি স্বীকার করেছেন যে অতীতে এভাবে বই কেনার নজির নেই।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।