৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার

জেলায় বিএনপির রাজনীতিতে ধস

কক্সবাজার জেলা জুড়ে ধস নেমেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপির রাজনীতিতে। দীর্ঘ দিন ধরে সাংগঠনিক কর্মকান্ড ঝিমিয়ে পড়ায় বিএনপির রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে দীর্ঘদিন রাজপথে থাকা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা। জেলা জুড়ে বিএনপির এই করুন দশার জন্য দায়ি করা হচ্ছে দলটির বর্তমান সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরীর সাংগঠনিক দায়িত্বে অবহেলা ও স্বজনপ্রীতিকে। জেলায় বিএনপির রাজনীতিকে চাঙ্গাকরতে দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন চান নেতাকর্মীরা। সভাপতির হিংসাত্মক মনোভাভাবের কারণে পদ হারানোর ভয়ে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কথা মুখ ফুটে বলতে পারছেনা নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে বিএনপিকে চাঙ্গা করতে সারাদেশের সাংগঠনিক ৫১টি টিম গঠন করেছে দলের প্রধান খালেদা জিয়া। আজ কক্সবাজারে দলের নেতাকর্মীদের সাথে প্রতিনিধি সভা করবেন সাংগঠনিক টিমের প্রধান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির কেন্দ্রিয় প্রতিনিধি দল। আজ দলটির প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রিয় নেতাদের প্রতি জেলার নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি জানাবে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
কক্সরবাজার জেলা বিগত ৪টি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ১০ম সংসদ নির্বাচন ছাড়া বাকি ৩টি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর জয়ের সবচেয়ে বেশি। ৯৬ সালের নির্বাচনে ৩টি সংসদীয় আসনে ৩টিতে জয় লাভ করে। ২০০১ সালের নির্বাচনে ৪টি আসনের মধ্যে বিএনপি জোট ৪টিতেই জয় লাভ করে। এমনকি ২০০৮ সালে সারা দেশে নৌকার জোয়ারেও কক্সবাজারে ৪টি আসনে ৩টিতে বিএনপি জয় লাভ করে। এর থেকেই বুঝা যায় কক্সবাজারে বিএনপির অবস্থান আওয়ামীলীগের তুলনায় শক্তিশালী ছিলো। কিন্তু বর্তমানে জেলা জুড়ে এই দলটির করুন দশা। জেলার কোথাও সভা সমাবেশ বা দলিয় কর্মসূচি পালনের জন্য নেতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যায় না। এমনকি কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করাও মুশকিল হয়ে পড়ছে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৮ বছর আগে শাহাজাহান চৌধুরীকে সভাপতি ও এডঃ শামীম আরা সপ্নাকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার দিনই নেতাকর্মীরা এই কমিটিকে অযোগ্য বলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলো। বছরে শাহাজাহান চৌধুরী ও সপ্না কমিটির অর্জনের খাতা শূণ্য বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলের নেতাকর্মীদের আক্ষেপ সুখে-দুঃখে কখনোই তারা দলের সভাপতি শাহাজাহান পাশে পাননি। শুধুমাত্র দলীয় কর্মসূচি থাকলে পার্টি অফিসে এসে বক্তৃতা দিয়ে চলে যান দলের সভাপতি। নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেনত, শাহাজাহান চৌধুরী জেলা সভাপতি হলেও তার রাজনীতি নিজের এলাকা উখিয়া কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। এমনকি নিজের নির্বাচনী এলাকা টেকনাফেও শাহাজাহান চৌধুরীর কর্মকান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিনিয়র নেতারা।
শাহাজাহান চৌধুরী রাজনৈতিক ব্যর্থতা নিজের এলাকা উখিয়ার বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেই দেখা গেছে। শাহাজাহান চৌধুরীর স্বেচ্ছাচারীভাবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ায় দল ত্যাগ করেছে দলের অর্থ সম্পাদক সদ্য প্রয়াত এস এম শাহ আলম, জেলা বিএনপির সদস্য খাইরুল আলম চৌধুরী, উখিয়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গফুর উদ্দিন ও মুনির আহম্মদ।
নিজ এলাকা বাদ দিলে জেলার বাকি ৭টি সাংগঠনিক উপজেলা মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, রামু, ঈদগাহ ও কক্সবাজার সদরের নেতাকর্মীদের সাথে তার কোন যোগাযোগ নেই। যার ফলে অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছে বিএনপির তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। দলের করুন দশা দেখে নেতাকর্মীরা আফসোস করা ছাড়া কোন উপায় নেই। কারণ প্রতিবাদ করতে গেলেই শাহাজাহান চৌধুরীর রোশানলে পড়ে ধেয়ে আসবে বহিষ্কারের তীর। তাই চুপচাপ দলের পতন দেখা ছাড়া কিছু করার নেই বিএনপি নেতাদের।
তৃনমূলের নেতাকর্মীরা কক্সবাজারে বিএনপিকে শক্তিশালী করতে জেলা বিএনপির বর্তমান অকেজো কমিটি পরিবর্তন করে তরুন, মেধাবী ও কর্মীবান্ধব নেতাদের হাতে দলের নেতৃত্ব দেয়ার দাবি করেছে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।