রহমত উল্লাহ:
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাঁধা পেরিয়ে নারীরা আজ সমাজে মর্যাদার স্থানে প্রতিষ্ঠিত হতে সর্বদা সচেষ্ট। তবে এ জন্য নারীদের স্বাবলম্বী হতে হবে, হতে হবে আত্মনির্ভরশীল। আর স্বাবলম্বী হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা। বর্তমান বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। দেশের অনেক নারী আজ তাঁদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও সৃষ্টিশীল কর্মের সর্বোত্তম প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বর্তমান বিশ্ব ও মানব সম্প্রদায় আজ এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পতিত
কোভিড-১৯(করোনাভাইরাস) নামক রোগের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে এবং কর্মযজ্ঞে স্থবিরতা বিরাজ করছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি এই সময়ে মানুষের, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্কদের নানাবিধ মানসিক সমস্যা তৈরির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।
পাশাপাশি কর্মহীনতার জন্য পরিবারের আর্থিক উপার্জন কমে যাচ্ছে। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের খাপ খাওয়াতে হবে, করোনার তৈরি হুমকি থেকে কর্মের নতুন সুযোগ খুঁজতে হবে। এ সময়টাকে কাজে লাগিয়ে ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে, আর এ ক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে আসতে হবে। তাঁরা নিজেদের শিক্ষা, প্রতিভা ও মননশীলতা কাজে লাগিয়ে একেকজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন। তেমনি একজন সফল উদ্যোক্তা উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার শীলঘাটার পুলিশ ইন্সপেক্টর রনজিত কুমার বড়ুয়ার সহধর্মিণী নারী উদ্যোক্তা মিসেস শেলী বড়ুয়া।
যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয়ে ২০১০ সালে মাত্র ৬টি অস্ট্রেলিয়ান দুগ্ধজাত গাভী নিয়ে শুরু করেন আশা ডেইরি ফার্ম নামক খামার। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ৫৫টি গরু নিয়ে শেলী বড়ুয়া বর্তমানে সাতকানিয়া উপজেলার বৃহৎ ডেইরি ফার্মের মালিক।
বর্তমানে এই খামার থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হয় ৩’শ থেকে ৪’শ লিটার দুধ। আর সেই দুধ গ্রামের চাহিদা পূরণ করে চলে যায় সাতকানিয়া বান্দরবান সহ বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে। আর এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করতে শেলী বড়ুয়ার অধীনে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বেশ কিছু যুবকের।
পুলিশ ইন্সপেক্টর স্বামী রনজিত বড়ুয়া করেছেন দেশ ও জনগণের সেবা আর একজন নারী হিসেবে স্বামীর পাশাপাশি মিসেস শেলী বড়ুয়াও সমাজের জন্য রেখেছেন অগ্রনী ভূমিকা। কেবল সফল গৃহবধু, স্ত্রী বা মা নন, তীব্র ইচ্ছা শক্তি,কঠোর পরিশ্রম আর একাগ্র নিষ্ঠায় নিজ পরিচয়ে একজন সফল নারী উদ্যোক্তার পরিচয় দিলেন তিনি। এই সফল নারী তাঁর সন্তানদেরকেও আর্দশিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে।
পুলিশ ইন্সপেক্টর রনজিত কুমার বড়ুয়া সাথে কথা তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে শতভাগ বিশুদ্ধ দুধ সরবরাহের অঙ্গীকার নিয়ে আমার স্ত্রী এ ফার্মটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিলে তিলে এ ফার্মটিকে এই পর্যায়ে আনা হয়েছে এবং এটা করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিশেষ করে গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানান। তাই তাদের একটিই আবেদন গৌ খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার।
সাতকানিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম বলেন, ওসি রনজিত বড়ুয়া আমার সাথে যোগাযোগ করলে এবং আমার সু-পরামর্শে তিনি এই ফার্ম তৈরি গড়ে তুলেব। তাঁর সহধর্মিণী মিসেস শেলী বড়ুয়ার তত্ত্বাবধানে এই ফার্ম পরিচালিত হয়ে আসছে।জনগণের কাজ, সংসারের কাজ করেও তিনি গরুর খামার করে লাভবান। তিনি একজন সফল নারী উদ্যোক্তা ও সফল খামারি। তার খামারের খোঁজখবর রাখি। মাঝেমধ্যে গরু-গাভির কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমি সুপরামর্শ ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে আসছি। তিনি এই খামারটির সফলতা কামনা করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।