কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ কক্সবাজারের তারকা হোটেল দি কক্স টুডে ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা নিয়ে মিথ্যাচার করছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট সাইফুল ইসলাম জয়।
কক্স টুডে ইস্যুতে জয় ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, “বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশক্রমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ জনস্বার্থে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রট রোটেশন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটদের মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দায়িত্ব বন্টন করে থাকেন। সাপ্তাহিক রোটা অনুসারে ঐ দিন আমি ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ ভ্রাম্যমান আদালতের দায়িত্বে ছিলাম। সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব সাইফুল আশরাফ, ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জনাব সুলতান মাহমুদ মিলন ও জেলা স্যানেটারি পরিদর্শক ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক জনাব তরুণ বড়ুয়া সাথে ছিলেন।”
রেস্টুরেন্টে মোবাইল কোর্টের অভিযান পরিচালনার সময় বেশ কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়। এগুলো হলো:
১) ভোক্তাদের নজরে আনার জন্য খাবারের মূল্য তালিকা টাংগানো আছে কিনা
২) একই ফ্র্রিজে কাঁচা ও রান্না করা খাবার সংরক্ষণ করা হয় কিনা
৩) রান্নাঘরের নিকটে আবর্জনার স্তুপ রয়েছে কিনা
৪) নিষিদ্ধ পলিথিনে খাবার মুড়িয়ে রাখে কিনা
ম্যাজিস্ট্রেট জয় জানান, হোটেল কক্স টুডে কর্তৃপক্ষ এই ৪টি ক্ষেত্রেই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। সেই সাথে বস্তা ভরে নিষিদ্ধ পলিথিন মজুদ রাখা ও দীর্ঘ দিন পুরাতন স্যুপ ফ্রিজে রাখার মতো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব অনিয়মের দায়ে ভবিষ্যতে ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনায় হোটেল কক্স টুডে কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ সংশোধিত ২০১০ এর ৬(ক), ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৩৯, ৪৩ ধারা লংঘন করায় এবং একই আইনের দোষ স্বীকারোক্তি ভিত্তিতে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় বলে জানান পর্যটন সেলের দায়িত্বে থাকা এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
জয় দাবি করেন, “কক্স টুডেতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় আমার কোনরূপ ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত নয়। দোষ স্বীকার করে হোটেল কক্সটুডে কর্তৃপক্ষ জরিমানার টাকা পরিশোধ করে এবং ভবিষ্যতে আরো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার বিষয়ে অংগীকার এবং ক্ষমা প্রার্থণা করেন। সব দোষ স্বীকার করার পরের দিন হোটেল কক্স টুডে কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গোলঘর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের খাবার বাবদ ৩৫ হাজার টাকা বকেয়া বিল পরিশোধের জের ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মর্মে সাংবাদিকদের তথ্য পরিবেশন করে, যা পুরোপুরি মিথ্যা। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সাথে জেলা প্রশাসনের ৩৫ হাজার টাকার বকেয়া বিলের সাথে কোন সম্পর্ক নাই।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জয়ের মতে, এটি হোটেল কর্তৃপক্ষ মোবাইল কোর্টকে চ্যালেঞ্জ সামিল করার সামিল। জেলা প্রশাসনের নিকট যে কোন ধরনের প্রাপ্ত বিল যথানিয়মে পরিশোধ করা হয়। হোটেল কর্তৃপক্ষকেও যথাসময়ে বিল পাশ হলে চেকের মাধ্যমে বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে বলে তিনি জানান। ম্যাজিস্ট্রেট জয় বলেন, এটি কোন ব্যক্তিগত বিল নয়। এটি জেলা প্রশাসনের বিল। অথচ বকেয়া বিলের বিষয়ে মিথ্যাচার করে হোটেল কক্সটুডে কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের সুনামকে পরিকল্পিতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ফেসবুকে দেয়া পোস্টে কক্স টুডে হোটেলে অভিযানের সময় রেস্টুরেন্টের ভেতরের বেশ কিছু ছবিও শেয়ার করেছেন ম্যাজিষ্ট্রেট জয়।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।