১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১ পৌষ, ১৪৩২ | ২৪ জমাদিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা   ●  ইয়াবার কথোপকথন ভাইরাল হওয়া ডালিম এখনো অধরা   ●  বৃত্তি পরীক্ষায় বিশেষ গ্রেড পেল খরুলিয়ার রোহান   ●  মরিচ্যা চেকপোস্টে ৪০ হাজার ইয়াবাসহ ভুয়া নৌবাহিনী সদস্য আটক   ●  উখিয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেমের ইন্তেকাল   ●  উখিয়ায় নিখোঁজের ৪দিনেও সন্ধান মেলেনি শিশু নুরশেদের   ●  উখিয়ায় প্রায় ৫ কোটি টাকার ইয়াবাসহ বাহক আটক, অধরা মাদক সম্রাট ছোটন ও মামুন

কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারে লোপাট চলছে

পলাশ বড়ুয়া, উখিয়াঃ
কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারে সরকারি টাকা লোপাট চলছে। কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারের ডরমিটরির ভাড়া সরকারি খাতে জমা নেই, মেরামতের টাকা আত্বসাৎ, সরকারি চারা বিক্রয়ে গাফেলতি সহ নানা অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক মো শামশুল আলম সরকারি চাকুরীজীবী না হয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যবসায়ীর ভুমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায়, ডি ডি শামশুল আলম দীর্ঘ ৪ মাস যাবৎ পরিবার নিয়ে ডরমেটরির ভিআইপি রুম ব্যবহার করে সংসার করে আসছে। কিন্তু সরকারি কোসাগারে একটি টাকাও জমা দেয়নি যদিওবা নিয়ম রয়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য দৈনিক ভাড়া ৩ শত টাকা বেসরকারি মেহমানের জন্য ৬ শত টাকা সরকারি নিয়ম রয়েছে, তন্মধ্যে অর্ধেক সার্ভিস চার্জ কাটা হবে, ঐ সার্ভিস চার্জ দিয়ে ডরমেটরির কেনাকাটার খরচ চলবে অবশিষ্ট অর্ধেক সরকারি খাতে জমা থাকবে। কিš‘ সার্ভিস চার্জের কোন রিসিভ না কেটে ঐ টাকা আত্বসাত করে ভাগ-ভাটোয়ারা করে থাকে, তবে কেনাকাটার সময় সরকারি কোষাগারের টাকা দিয়েই কেনাকাটা করে থাকে যা একটা বড় দূর্নীতি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিডি শামশুল আলম বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ৩শ টাকা, বেসরকারি মেহমানের জন্য ৫শ টাকা ভাড়া আদায় করা হয়। যা প্রতিমাসের ২০-২১ তারিখের দিকে নিয়মানুযায়ী সার্ভিস চার্জের টাকা ব্যাংকে জমা করা হয়। অনিয়ম-দূর্নীতি’র বিষয়টি সঠিক নয় বলে তিনি জানান।

এ ভাবে সাবেক ডি ডি কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস ডরমেটরির ২০১ নম্বর রুম ব্যবহার করে দীর্ঘ আড়াই বছর পরিবার নিয়ে সংসার করেছে কিন্তু সরকারি কোষাগারে একটি টাকাও জমা করেনি। ঐ আড়াই বছরের প্রায় ২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ডরমেটরির ভাড়া সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে তিনি অন্যত্র বদলি হয়ে চলে গেছে।

জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজারের সাবেক ডিডি বর্তমানে ঝিনাইদহে হর্টিকালচারের ডি.ডি কৃপাংশু শেখর বলেন, কক্সবাজার দায়িত্বপালন কারে তাঁর নিজস্ব বাসা ভাড়া ছিল। ডরমেটরিতে কোন কক্ষ ব্যবহার করেননি। তাই তিনি ভাড়া বকেয়া থাকার বিষয়টিও সত্য বলে জানান।

সূত্রে আরো জানা যায়, এ ভাবে কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারের একটি বাসা দখল করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সহকারী উদ্যান তথ্যবিদ মোহাম্মদ এমরান দীর্ঘ চার বছর যাবৎ অব¯’ান করে আসছে কিš‘ সরকারি কোসাগারে একটি টাকাও জমা দেয়নি।

আরমানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজার হর্টিকালচার সেন্টারের কেয়ার টেকার নায়েব আলী দীর্ঘ আড়াই বছর যাবৎ ডরমেটরির ১০১ নম্বর রুম বিনা ভাড়ায় অবস্থান করে আসছে কিন্তু দেখার কেউ নেই, এভাবেই সরকারি টাকা লুটপাট চলছে।

এছাড়াও ডরমেটরির হল রুম ও রান্না ঘর বিভিন্ন এনজিওদের কে দৈনিক ভাড়া দেয়া হয় কিন্তু ডি ডি শামশুল আলম রান্নাঘর নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে সরকারি কর্মচারীদের ব্যবহার করে এনজিওদের কাছ থেকে পৃথক ভাবে ঠিকাদারী করে টাকা আত্বসাৎ করে থাকে যা নিয়ম নেই এবং ঐ হলরুম থেকেও কোন সার্ভিস চার্জ সরকারি কোষাগারে জমা হয়না।

অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কেয়ার টেকার নায়েব আলী বলেন, স্যারদের কথামতো গত ১০ বছর ধরে ৩য় তলায় একটি কক্ষে অবস্থান করছেন। কোন ধরণের ভাড়া দেয়নি। মাটি ভরাট প্রসঙ্গে বলেন, স্যারেরা ঢাকা কেন্দ্রিক ঠিকাদার নিয়োগ করেছিল। কক্সবাজারে মাটি ভরাটের খরচ বেশি বলে কাজটি সম্পন্ন হয়নি। তিনি অনিয়মের অভিযোগ পেলে অফিসে গিয়েও তদন্ত করার কথা বলেন।

কক্সবাজার হর্টিকালচারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিন সাবেক ডি ডি কৃপাংশু শেখর বিশ্বাসের সহায়তায় বিগত অর্থবছরের মেরামত খাতের লাখ লাখ টাকা আত্বসাত করেছে। বিগত সালের মাটি ভরাটের কাজের জন্য টাকাগুলো ঠিকাদার নিয়োগ না করে নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা আত্বসাৎ করেছে। এছাড়াও সার ক্রয়সহ আরো অন্যান্য মেরামত খাতের টাকাগুলো প্রতিবছর এভাবে আত্বসাৎ করে থাকে।

সূত্র জানায়, উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিন প্রতি বছর সরকারি নার্সারীর চারা বিক্রি না করে বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন জাতের চারা এনে বাহিরে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকার ব্যবসা করে থাকে ফলে সরকারি চারাগুলো অবিক্রিত রয়ে যায়। এবছর ও ডি ডি শামশুল আলম এর সাথে যোগসাজসে করে উক্ত শাহাব উদ্দিন বাহির থেকে বিভিন্ন জাতের চারা এনে বিক্রি করার পায়তারা করছে বলে জানা যায়।

এ প্রসঙ্গে শাহাব উদ্দিন বলেন, নার্সারীতে যে সব চারা উৎপাদন হয় না, ওই সব চারা গুলো বাহির থেকে সংগ্রহ করা হয়। জেলাব্যাপী মাল্টা চারার ব্যাপক চাহিদার ভিত্তিতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ হাজার মাল্টা চারা চাষীদের মাঝে সরবরাহ করেছি। তার বিপরীতে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অফিসে বুঝিয়ে দিয়েছি। এ সময় তিনি কক্সবাজার হর্টিকালচারে অনিয়মের অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখারও আহবান জানান।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।