৩০ এপ্রিল, ২০২৫ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১ জিলকদ, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. আবদুল হাই এর ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী ২৯ এপ্রিল   ●  লুৎফুর রহমান কাজলের মা সাবেক এমপি সালেহা খানমের ইন্তেকাল করেছেন   ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার

কক্সবাজারে করোনা প্রতিরোধে সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি: সকল পর্যায়ের মানুষের সাড়া

বিশেষ প্রতিবেদকঃ বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করা হয়।

এরপর কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কলাতলী এলাকা ও ফিশারিঘাট এলাকায় জনসচেতনতা কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে শতাধিক দুস্থ ও খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আলু, লবণ ও তেলসহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

সেনা সদস্যদের জনসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে পরিচালিত নানাবিধ কর্মকাণ্ড তদারকির লক্ষ্যে এ সময় জিওসি ১০ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার কক্সবাজার এরিয়া মেজর জেনারেল মোঃ মাঈন উল্লাহ চৌধুরী নেতৃত্বে আজ সকালে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে.কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ, পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আলীমুল আমীন, জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন, ২ পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আলীমুল আমীন, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ সামরিক এবং বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কার্যক্রম শেষে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ জিওসি এর সভাপতিত্বে সাগরপাড় সংলগ্ন আর্মি ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের জলতরঙ্গে অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কনফারেন্সে যোগদান করেন।

জিওসি ১০ পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্বে পরিচালিত জনসচেতনতা মূলক কর্মকান্ডের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অসহায় ও দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বিচ্ছিন্নভাবে ত্রাণ বিতরণ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানােনা হয়।

কক্সবাজার ডিসি অফিসের সামনে জুতা সেলাই ও পালিশের কাজ করেন নির্মল শীল। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সরকারের নির্দেশনা মেনে গত ছয়দিন সে বাসায় থাকলেও জমানো টাকা ও খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে আজ কাজে বের হয়েছেন। জেলা প্রশাসন ও সেনা সদস্যদের ঝটিকা ত্রান বিতরনের সময় সে এক প্যাকেট ত্রাণ পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যায়।

অশ্রুসজল চোখে সে এ প্রতিবেদককে জানায়, তার মতো হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের এভাবে সহযোগিতা করলে তারা দুর্যোগ কেটে না যাওয়া পর্যন্ত আর বাইরে বেরোবে না।

একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করল রিকশাচালক মজনু আলী। তিন ছেলেমেয়ে ও বউ নিয়ে তার সংসার পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে। শহরে রিকশা চালিয়ে দুই পয়সা ভাল আয় রোজগারের জন্য একটি মেসে কষ্ট করে থাকেন। জমানো টাকা থেকে গত ৬-৭ দিন কেটে গেলেও পেটের তাগিদে আজকে বাধ্য হয়ে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছেন। কিন্তু আশানুরূপ যাত্রী না থাকায় যখন হতাশাগ্রস্থ বোধ করছিলেন তখনই এই ত্রান পেয়ে তার মুখে খুশির হাসি বয়ে যায়। এ প্রতিবেদককে তিনি জানান, আগামী ১০ দিন তিনি আর বাসার বাইরে বের হবেন না।

“আপনার সুস্থতাই আমাদের কাম্য”- এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৪ মার্চ থেকে কক্সবাজার জেলা এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের আটটি উপজেলায় রামু সেনানিবাসের সদস্যরা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে দিন-রাত কাজ করে চলেছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় বিগত কয়েকদিন ধরে এই জনপদের অসচ্ছল, খেটে খাওয়া ও দরিদ্র মানুষদের মাঝে রামু সেনানিবাসের তত্ত্বাবধানে ব্যাক্তি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি , সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাধারণ মানুষদের বাসায় অবস্থান নিশ্চিত করা, বিনা প্রয়োজনে বাইরে চলাচলরত ব্যক্তিদের ফুল দিয়ে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ গ্রহণ, শহর-গ্রামের বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন এবং করোনা প্রতিরোধে নানা ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম বেগবান করার মধ্য দিয়ে রামু সেনানিবাসের সদস্যরা ইতিমধ্যে সব শ্রেণীর মানুষের ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করেছেন। জনকল্যাণে সেনাবাহিনীর গৃহীত এ ধরনের কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে রামু সেনানিবাস সূত্র হতে জানা যায়।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।