আদালতে মামলা ও স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ সত্ত্বেও কক্সবাজার পৌরসভা অর্ধশত বছরের বসতী থেকে ভুমিহীনদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা। এসময় পৌরসভার কর্মচারী ও ভাড়াটিয়াদের এলোপাথাড়ি হামলায় নারী-পুরুষসহ ৪ জন আহত হয়েছে। ২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শহরের পশ্চিম বাহারছড়া (ডাক পোষ্টের পেছনে) এলাকায় দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এসময় আহতরা হলো, জাহাঙ্গীর আলম(৪২), আরেফা আক্তার (২৬), মোহছেনা আক্তার (২২), মিনান্নাহার(১৮)। হামলাকারীরা মহিলাদের স্বর্ণ লুঠ, বৈদ্যুতিক মিঠার লুঠ, ২টি মোবাইল সেট লুঠসহ ভাংচুর করে বসতঘরের ৪/৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে। এদিকে বেশ কিছুদিন ধলে স্থায়ী লীজভূক্ত ভূমিহীনদের বসতি উচ্ছেদের পাঁয়তারা চালাচ্ছে কক্সবাজার পৌরসভা। ওই জমির দীর্ঘ মেয়াদি লীজ গ্রহীতা সোহেল আজিজ, আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইউছুপ, আবুল মঞ্জুর, সহিদুল হক (বাবুল), তবারক হোছাইন, আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোহাম্মদ আলী, শ্রী দিলীপ কুমার দাশ ও জাবেদ মোহাম্মদ শামসুল হুদা’র পক্ষে আমমোক্তার নাছির উদ্দিন এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে প্রশাসন ও আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জমির ৯ জন মালিকের পক্ষে নিয়োজিত আমমোক্তার নাছির উদ্দিন জানান, কক্সবাজার মৌজার ১ নং তপসীলের বিএস ২০ নং খতিয়ানের বিএস ৩০৭১ নং দাগের আন্দর .১০ একর জমি (বিরোধীয়)তে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে ক্ষেতখামার ও বসতি করে তারা ভোগ দখলে আছেন।
যা কক্সবাজার পৌরসভার সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল প্রকাল কার্যক্রম সমাপ্ত করে বিগত ১৯৮৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ২৩১০ নং রেজিস্ট্রি লীজ দলিলমূলে প্রাপ্ত হন। তখন থেকে পৌরসভা বরাবর খাজনা আদায়পূর্বক উক্ত জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে ছিলেন ও আছেন। সেখানে গৃহনির্মাণ ও ক্ষেতখামার করেছেন। সম্প্রতি জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে নানামুখি ফন্দিফিকির করছে। জমির খাজনা নিতে অস্বীকার করছে। জমি জবর দখল করতে ভাড়াটিয়া লোকজনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ৮ আগষ্ট বিকালে ঘরবাড়ি ও ক্ষেতখামার নষ্ট করে জমি দবর দখলের অপচেষ্টা চালায় পৌরসভা। ঘটনার পরে কক্সবাজার সদর সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে অপর মামলা নং-৮৭/২০২০ দায়ের করেন জমির মালিকপক্ষ। এতে কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী ও পৌরসচিবকে বিবাদি করা হয়। এরই মধ্যে কয়েক দফা উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হয় বলে জানান মালিক পক্ষে নিয়োজিত আমমোক্তার নাছির উদ্দিন। তিনি পশ্চিম বাহারছরা এলাকার আবদুল করিমের ছেলে।
নাছির উদ্দিনের অভিযোগ, বৈধ লীজমূলে তারা জমি ভোগ দখলে আছেন। এরপরও উচ্ছেদ চেষ্টা করলে তারা আদালতের শরণাপন্ন হন। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় স্থিতাবস্থায় বজায় রাখতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর নির্দেশও দিয়েছেন বিজ্ঞ বিচারক। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে গত ২৯ অক্টোবর উচ্ছেদ করতে যায় পৌরসভার কিছু লোক। এ সময় তারা হুমকি দিয়ে চলে আসে।
এরপর ১ নভেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে আবারো উচ্ছেদের চেষ্টা চালায় মেয়র মুজিবের লোকজন। ২ নভেম্বর ফের উচ্ছেদের চেষ্টায় হামলা চালায় তারা। আমমোক্তার নাছিরের অভিযোগ মেয়র ভূমিহীনদের সম্পত্তি নিজেই কুক্ষিগত করতে আদালতের নির্দেশকে কোন ধরনের তোয়াক্কা করছেননা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জমির মালিকরা জীবন ও সম্পদ নিয়ে শংকা প্রকাশ করছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগিরা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।