২ অক্টোবর, ২০২৫ | ১৭ আশ্বিন, ১৪৩২ | ৯ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ   ●  শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান   ●  “প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব নয়”   ●  নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে তাঁতীদলের খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে না। সত্য, ন্যায় ও , নির্যাযিতদের পক্ষে কথা বলার কারণেই দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ান এবং দৈনিক আমার দেশসহ ৩৫ টি অনলাইন পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান এর মত আপোষহীন কলম সৈনিকদের বছরের পর বছর কারাগারে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে।
শুক্রবার সংবাদপত্রের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার’র এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
১৬ জুন দিবসটি পালন উপলক্ষে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সকাল ১১ টায় আলোচনা সভার আয়োজন করে সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার (জেউসি)। এতে ইউনিয়নের সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে বাকশাল কায়েম হয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সম্পূর্ন পরিপন্থী উক্ত সংশোধনীর ফলে জাতির ঘাড়ে চেপে বসে একদলীয় শাসন। এরই ধারাবাহিকতায় ঐ বছর ১৬ জুন বাকশাল সরকার প্রণয়ন করে ‘দ্য নিউজ পেপার এমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট’। এবার টানা ক্ষমতায় এসে সত্য প্রকাশের ধারক-বাহক দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি ও চ্যানেল ওয়ান, দৈনিক আমার দেশসহ বিভিন্ন মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আবার ৫৭ ধারায় একটি কালো আইন করে সাংবাদিকদের মূখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কলম সৈনিকরা অত্যান্ত দুর্বিসহ জীবন পার করছে। তাই এ সভা থেকে ৫৭ ধারা কালো আইন বাতিল, বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়া ও সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, একদলীয় ‘বাকশাল’ দর্শন অনুসারে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চারটি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ছাড়া বাকি সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সাংবাদিক সমাজ প্রতিবছর এ দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। বলাবাহুল্য, ১৯৭৮ সালে অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক কাউন্সিলে গৃহীত সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ দিবস পালিত হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ঐ ঘোরকৃষ্ণ অধ্যায়ের সরকারের স্বেচ্ছাচারের শিকার হয়ে প্রায় ৮ হাজার সাংবাদিক ও সংবাদপত্রসেবী পেশাচ্যুত হয়েছিলো। বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন সপরিবারে অবর্ণনীয় দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করতে হয়েছে বহু সাংবাদিককে। এমনকি তাদের কেউ কেউ এ অবস্থার মধ্য দিয়েই দুনিয়া থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন। ‘কালো’ জুনের পর সারাদেশে চার শতাধিক পত্রিকার মধ্যে শুধু সরকারের নিয়ন্ত্রণে মাত্র চারটি পত্রিকা বের হতো। এগুলো হলোÑ দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার ও বাংলাদেশ টাইমস। যে ইত্তেফাকের জন্মই হয়েছিলো আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবকে সমর্থনের জন্য সেই ইত্তেফাকের প্রায় দুই যুগের ইতিহাস মুছে ফেলে বাকশাল সরকারের নির্দেশে প্রথম পৃষ্ঠায় লিখতে হয়েছিলো ‘১ম বর্ষ ১ম সংখ্যা’। অবশ্য ১৫ আগস্টের পর ইত্তেফাক ২৪ আগস্ট পূর্বের সিরিয়ালে ফিরে আসে আটষট্টি দিনের এপিসোডের পর এবং দৈনিক বাংলা তার পূর্ব সিরিয়ালে ফিরে যায় ১৯৭৫ সালের ৬ নবেম্বর।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রথমবারের সরকার ১৯৯৯ সালে টাইম-বাংলা ট্রাস্টের চারটি পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে প্রায় ৫শ’ সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে পথে বসায়। বিগত ২০০৯ সালে দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকে ‘চ্যানেল ওয়ান’, ‘দিগন্ত টেলিভিশন’, ‘ইসলামিক টিভি’, ‘দৈনিক আমার দেশ’সহ বেশ কিছু গণমাধ্যমের ওপর খড়গ চালানো হয়।
এবার এমন এক সময় সংবাদপত্র শিল্পের কালো দিবস পালন হয়েছে যখন বিশ্ব গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের দুই ধাপ অবনমন ঘটেছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার সাথে খোদ সরকার বা সরকারদলীয় সংসদ সদস্য, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের যোগসূত্রতায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করলেও পরিস্থিতির এতটুকু উত্তরণ ঘটছে না।
বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা ফ্রান্সভিত্তিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ১৮০টি দেশের গণমাধ্যম পর্যালোচনা করে সর্বশেষ চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল যে সূচক প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় বিশ্বে স্বাধীন গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ পিছিয়েছে। সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৬তম। গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৪। এবারের সূচকে বাংলাদেশের সার্বিক স্কোর ৪৮.৩৬, যা গত বছর ছিল ৪৫.৯৪। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস জানায়, ‘বিশ্বব্যাপী স্বৈরাচারী সরকারের উত্থানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে। এর আগে এমন হুমকিতে আর কখনও পড়তে হয়নি। ওয়াকিবহাল মহল বলছেন, বিড়ম্বণা এড়িয়ে চলতে গণমাধ্যম নিজেরাই সেন্সরশীপ করছে।
সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার’র সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ এর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি জিএএম আশেক উল্লাহ, সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হেলালী, কার্যনির্বাহি সদস্য আনছার হোসেন, কবি রুহুল কাদের বাবুল, আবদুল্লাহ নয়ন, ইব্রাহীম খলিল মামুন, ইসলাম মাহমুদ ও ছৈয়দ আলম প্রমূখ।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।