৪ জুন, ২০২৩ | ২১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ | ১৪ জিলকদ, ১৪৪৪


শিরোনাম
  ●  জাতীয় শ্রমিক লীগ চকরিয়ার ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন শাখার কর্মী সভায় এমপি জাফর আলম   ●  বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় এমপি জাফর আলম   ●  স্কাউটসসের নিয়ন্ত্রণ জামায়াত-শিবিরের হাতে যাচ্ছে কিনা কঠোর নজরদারি করতে হবে- এমপি জাফর   ●  সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আলেম-ওলেমাদের এগিয়ে আসতে হবে-এমপি জাফর   ●  ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে বর্তমান উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে   ●  আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীর সমর্থককে জরিমানা ও মুচলেকা আদায়   ●  পুকুরে ডুবে প্রাণ গেল শিশু তৌকির   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা   ●  শাহপুরী হাইওয়ে পুলিশের অভিযানে ইয়াবাসহ একজন গ্রেফতার   ●  কক্সবাজারে রেডিও সৈকত এর ১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

লোহাগাড়ায় খালের চরের সমতল তামাকের আগ্রাসন

01.psd
লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশের ক্ষতিকর তামাক চাষের আগ্রাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফসলী জমি, খালেরচরসহ বিভিন্ন সমতল ভূমিতে এ তামাক চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন দেশী-বিদেশী কোম্পানীর পৃষ্টপোষকতায় তামাক চাষের দিকে কোন কোন এলাকার জনগণ ঝুঁকে পড়তেছেন। এতে ক্ষতি সাধন হচ্ছে সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি এবং নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমতল ভূমির ফসলী ক্ষেতের উপর। এমনকি বিরূপ প্রভাব পড়তেছে জীব বৈচিত্রের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের উপরও। তামাক একপ্রকার ক্ষতিকর জিনিস। এ চাষে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ হাঁপানি, কাঁশি ও ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অপরদিকে, তামাক চাষে অতিমাত্রায় ইউরিয়া সার ও বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির উর্বরাশক্তি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কলাউজান ও চরম্বা ইউনিয়নদ্বয়ের টংকাবতী খালের চর এবং হাঙ্গরখালের জঙ্গল পদুয়া এলাকার বি¯তৃর্ণ চরাঞ্চলে ব্যাপক তামাক চাষ দেখা গেছে। বিশেষ করে খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বি¯তৃর্ণ চরাঞ্চলে এ তামাক চাষ করার প্রবণতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তামাক চাষের সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা জানান, তাঁরা যেসব জায়গায় অন্য কোন ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না, ওই সব জায়গায় তাঁরা তামাক চাষ করতেছেন। একই প্রসঙ্গে কোন কোন পরিবেশবাদীরা জানিয়েছেন, একই জমিতে পর পর কয়েক বার তামাক চাষ হলে সে জমিতে অন্য কোন ফসল উৎপাদন মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয়। কারণ, তামাক চাষের কারণে মাটির প্রাণশক্তি একেবারে ফুরিয়ে যায়। কৃষকেরা জানান, তাঁরা একান্ত নিরুপায় হয়ে ওই সব অনাবাদী জায়গা আবাদ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে তামাক চাষ করেন এবং এতে তাঁরা লাভবানও হন। যার কারণে তাঁরা দিন দিন তামাক চাষের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন। গত ১৬ মার্চ বিকেল আনুমানিক ৪টায় চরম্বা রাজঘাটা এলাকার টংকাবর্তী খালের চরাঞ্চল পরিদর্শনকালে বিশাল আয়তন বিশিষ্ট তামাক চাষের ক্ষেত উক্ত প্রতিনিধির দৃষ্টিগোচর হয়। বিশাল খালের চরে দেখা গেছে সবুজ শ্যামল ক্ষেতে তামাক চাষের ভান্ডার। তামাক চাষের মালিক তৈয়ব উল্ল্যা (৬৫) এর পুত্র আবুল হাশেম জানান, এলাকায় প্রায় ১শ একরের মত তামাক চাষ রয়েছে। পার্শ্ববর্তী পার্বত্য এলাকার বিশাল এলাকা জুড়ে তামাক চাষ করা হয়েছে। তিনি এবার প্রায় ২ একর জায়গায় তামাক চাষ করেছেন। প্রতি একরে তাঁর ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা এবং  হয়তো তিনি বিক্রি করে প্রতি একরে পাবেন ২ লক্ষ থেকে সোয়া ২ লক্ষ টাকা। একই সময় দেখা গেছে তার ক্ষেতের পাশে নির্মিত হয়েছে একটি তন্দুল। গাছ থেকে পাতা কেটে ওই তন্দুলে আগুনের তাপে শুকিয়ে পরে ব্যবহারোপযোগী করে বাজারজাতকরণ করা হয়। শুকানো পাতা তাঁরা বিক্রি করেন গোল্ডলিপ কোম্পানীর সংশ্লিষ্ট লোকজনের নিকট। চাষ পদ্ধিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, সমতল ভূমি মাটি কুঁড়ে আটিঁ তৈরী করা হয়। কোম্পানী বীজ সরবরাহ করে। তাঁরা ওই বীজ এনে চারা সৃষ্টি করেন। পরে দেড় ফুট ব্যবধানে নির্মিত আটিঁর উপর চারাগুলো রোপন করা হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজন মত সার, পানি ও কীটনাশক প্রয়োগ করে তাঁরা চারা গাছগুলো যতœ করতে থাকেন। অতন্তঃ ৬ মাস পর ওই গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করে তাঁদের তন্দুলের মাধ্যমে ব্যবহারোপযোগী করে কলাউজান গাবতলীস্থ গোল্ডলিপ কোম্পানী সংশ্লিষ্ট লোকজনের কাছে পাইকারী ভাবে বিক্রি করেন। ক্ষেতের পরিচর্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, তাঁর ক্ষেত পরিচর্যা করার জন্য ৭/৮জন শ্রমিক সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের খাওয়া-দাওয়া ও মাসিক বেতনসহ বহু টাকা ব্যয় হয়। তুলনামূলকভাবে লাভ কম। এরপরও অন্য কোন ফসলের ক্ষেত করা যায়না বিধায় তাঁদেরকে বাধ্য হয়ে তামাক পাতার চাষ করতে হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তামাক পাতার চাষ হচ্ছে। তবে, তামাক পাতার চাষ না করার জন্য তাঁদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এরপরও ক্ষেতের মালিকেরা বিভিন্ন কারণে তামাক পাতার চাষ করে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। চরম্বা রাজঘাটা এলাকায় কত জন লোক তামাক পাতা চাষের সহিত জড়িত জানতে চাইলে কৃষকেরা জানান, এলাকায় আনুমাণিক ৫/৬জন লোক এ চাষের সহিত জড়িত। তাঁরা আরো জানান, যে জায়গায় অন্য কোন জিনিষের চাষ করা সম্ভব নয়, ওই জায়গায় তাঁরা তামাক পাতার চাষ করে যাচ্ছেন। সরকার যদি যথাযথভাবে ভিন্ন জিনিষ উৎপাদনে সহায়তা দিয়ে যায় তাহলে তাঁরা তামাক পাতার চাষ থেকে বিরত থাকবেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।