মোহাঃ আবু সায়েম, কক্সবাজার : বজলুর রশীদ আখন্দ! কক্সবাজারে জেল সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন দীর্ঘ ৩ বছর। দীর্ঘ এই সময়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে লেগেছে কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত বিভিন্ন রকমের উন্নয়নের ছোয়াঁ।
সুদক্ষ পরিচালনা, অভিজ্ঞতার বাস্তবিক জ্ঞান কাজে লাগিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে আজ উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। ৩ বছর আগের পরিবেশ ও বর্তমান কারাগারের পরিবেশ চমৎকারভাবে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
তথ্য মতে, ২০০১ সালে ২৭ মে কক্সবাজার জেলা কারাগারের সূচনা হয়েছিলো। বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮ গুণ বন্দি রয়েছে। ১২ দশমিক ৮৬ একর আয়তনের জেলার এ কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ৫৩০ জন। কিন্তু বর্তমানে এ কারাগারে অবস্থান করছেন ৪ হাজার ২৯৮ জন বন্দি। কারাভ্যন্তরের পরিমাণ ৪ দশমিক ৭৭ একর। সাধারণত কারাগারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ধারণ ক্ষমতার প্রেক্ষাপট অনুসারে, ৪৯৬ জন পুরুষ ও ৩৪ জন নারী বন্দি থাকার কথা। কিন্তু সে তুলনায় কারা কর্তৃপক্ষ ৮ গুণ বন্দি নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন। জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ এমন একজন অভিজ্ঞ ও সুদক্ষ অফিসার নানা কৌশল অবলম্বন করে ,ধারণ ক্ষমতার প্রায় ৮গুণ বন্দিকে স্বা¯থ্যসম্মত রাখতে তারঁ চৌকস ও মেধাবী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রচন্ড গরমে ৫৩০ জন বন্দির স্থলে ৪২৯৮ জন বন্দিকে পুনর্বাসন করে তিনি পরম যত্নে আগলে রেখেছেন। যা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। জেল সুপার তারঁ টিমকে সাথে নিয়ে কারাগারে শান্তি শৃংখলা সৃষ্টি, অসুস্থ বন্দিদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, উন্নতমানের খাবার পরিবেশণ, পায়ো নিষ্কাশন ব্যবস্থা অর্থাৎ সম্পূর্ণভাবে মানুষের মৌলিক চাহিদাসমূহকে বাস্তবায়ন করতে কাজ করছেন অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে।কারাগারে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় সর্বোপরি।
মডেল কারাগারে বাস্তবে রুপ দিতে সততা ও ন্যায় নীতিকতার মাপকাঠিতে অবিচল থেকে তিনি তারঁ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে কাজ করছেন জনকল্যাণে।
একজন সৎ ও প্রকৃত ব্যক্তির মাঝে যে সকল গুণ থাকা প্রয়োজন বজলুর রশীদ আখন্দের মাঝে সে সকল গুণ গুলোই বিদ্যমান রয়েছে। বলতে গেলে তিনি একজন আপাদমস্তক বহুগুণে গুনান্তিত মানুষ।কারাগারের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বন্দি পুনর্বাসনের জন্য ৬ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। যা আগামী জুনে উদ্বোধন হবার কথা রয়েছে। এছাড়া, দর্শনার্থীদের জন্য আধুনিক ও সাউন্ড সিস্টেম অপেক্ষা ঘর নির্মাণ, মহিলা কয়েদিদের বাচ্চাদের জন্য শিশু পার্ক নির্মাণ সহ কাঠামোগত ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কার্যক্রম বিদ্যমান র
য়েছে। তাছাড়া জেল সুপারের অনবদ্য প্রচেষ্টা ও সৃজনশীলতার মন মানসিকতার আরেক অনন্য উদাহরণ হচ্ছে, জেল সুপারের বাস ভবনকে ৪ তলা পর্যন্ত উর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণের কাজ, দর্শনার্থীদের একত্রে ১০-১৫ জনের কথা বলার সাক্ষাতকারের ঘর সম্প্রসারণের নির্মাণ কাজ, কারা রান্না ঘর সম্প্রসারণ সংস্কার ও উন্নয়নের কার্যক্রম এবং প্রচন্ড গরমে কারাভ্যন্তরে প্রচুর ফ্যানের ব্যবস্থাকরণ সহ আরো বহুমুখী উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। অতি শীঘ্রই তা বাস্তবে রুপ দিতে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেল সুপার। সত্যিই জেল সুপারের যাবতীয় উন্নয়নের কর্মকান্ড প্রশংসার দাবিদার। সৃজনশীল ও রুচিশীল মন মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি কক্সবাজার কারাগার পরিদর্শন করেন মানবাধিকার চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি জেলের অভ্যন্তরে সুন্দর পরিপাটি পরিবেশ, দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কাজের দৃশ্যসহ সার্বিক পরিস্থিতি দেখে বিমোহিত ও সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।