২৭ জুলাই, ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ | ২০ মহর্‌রম, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  কলেজছাত্র মুরাদ হত্যা মামলার আসামি রহিম কারাগারে   ●  আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির প্রতিবাদে কক্সবাজার ছাত্রলীগের সমাবেশ   ●  স্বেচ্ছাসেবী কাজে বিশেষ অবদানের জন্য হাসিঘর ফাউন্ডেশনকে সম্মাননা প্রদান    ●  চতুর্থবারের মতো শ্রেষ্ঠ সার্জেন্ট নির্বাচিত হলেন রোবায়েত   ●  সেন্টমার্টিনে ২ বিজিপি সদস্যসহ ৩৩ রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ২   ●  উখিয়ায় ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি; কাঁচা ঘরবাড়ি, গ্রামীণ সড়ক লন্ডভন্ড   ●  উখিয়ায় কৃষি বিভাগের প্রণোদনা পেলেন ১৮০০ কৃষক /কৃষাণী   ●  আরসার জোন ও কিলিংগ্রুপ কমান্ডার আটক ৩   ●  পটিয়া প্রেস ক্লাবের নতুন কমিটি গঠিত

কক্সবাজার জেলা পুলিশে আরো বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে !

images4

ইয়াবা ও মানবপাচারে জড়িত হিসেবে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অনন্ত ১০০ জন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্পর্শকাতর এই দু’টি বিষয়ে হার্ডলাইটে চলে গেছে পুলিশ বাহিনী। গত ২৪ জুন পুলিশ বাহিনীর যেসব সদস্য ইয়াবাসহ এ ধরণের অপরাধে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ইতোমধ্যে সকল ইউনিট প্রধানকে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ইয়াবা ব্যবসার ঘটনায় ডিবির ওসি সহ ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে, এর আগে ডিবি হতে বদলি করা হয়েছিল আরো ২ এসআইকে। কক্সবাজার জেলা পুলিশে আরো বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে ! এমন কথাই স্পষ্ট হয়েছে কয়েকজনের সাথে কথা বলে।
সুত্র মতে, চলতি বছর জেলা পুলিশের ৩৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মানব ও ইয়াবা পাচারের অভিযোগ উঠে আসছিল। তাদের বদলি কিংবা তদন্ত হয়নি। এছাড়া তালিকায় উঠেনি বা নিরবে ইয়াবা ও মানবপাচারে জড়িত চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ ও আরেক পদস্থ কর্মকর্তা। চলতি বছর ইয়াবা নিয়ে চকরিয়া থানার এক এসআই ও ২ জন কনস্টেবল এবং র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছিল। গত বছর ইয়াবা ও মানবপাচারের অভিযোগে বদলি করা হয়েছিল জেলা পুলিশের আরো ১০৪ জন পুলিশ কে।
পুলিশের একটি সুত্রটি জানিয়েছেন, ইয়াবা ও মানবপাচারের ঘটনাগুলোর বেশী ভাগই পদস্থরা জানতেন। তাদেরই আস্কারা পেয়ে বেপরোয়া গতিতে চালিয়েছে ইয়াবা ও মানবপাচারের মতো দেশদ্রোহী কাজ।
সুত্র মতে, বরাবরই চুনোপুটিরা বদলির শিকার হয়েছেন। শাস্তি পাচ্ছে , কিন্তু উচ্চ পদস্থরা বহাল থাকছে। নিম্ন পদবীদের ক্ষোভ, পদস্থরাই ইয়াবা ও মানবপাচার করিয়েছেন। এমন কথা জানিয়েছেন ক্ষুদ্ধ কয়েকজন এএসআই ও এসআই পদবির পুলিশ।
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে বুধবার দুপুরে এআইজি মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইয়াবাসহ পুলিশের এক এএসআই আটক হওয়ার ঘটনায় সিআইডির ডিআইজি সাইফুল হককে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (পিআইও) কাজী জিয়া উদ্দিন ও ডিসিপ্লিন এবং প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড শাখার সিনিয়র এএসপি আব্দুস সালাম এবং ফেনী জেলার এএসপি।
কমিটিকে সাময়িক বরখাস্তকৃত এএসআই মাহফুজুর রহমানসহ তার সব সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কমিটির কাছে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।
আইজিপি বলেছেন, ‘সততা বা অসততা মানুষের নিজস্ব গুণ বা দোষ। কোনো অপরাধের দায়ভার একান্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিজের। পুলিশ বিভাগ কোনো অপরাধীকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরা এটা বরদাস্ত করি না। বরং নিজের ইউনিটে কেউ অপরাধে জড়ালে তাকে অপরাধী হিসেবেই গণ্য করি।’
তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করি। কোনো সদস্যের অপরাধের কারণে পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তিকে জড়ানোর চেষ্টাও সমীচীন নয়।’যারা ইয়াবাসহ অনুরূপ অপরাধে জড়িয়েছে- তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি।
এছাড়া মানবপাচার, মাদক এবং অন্যান্য চাঞ্চল্যকর ঘটনা তদন্ত এবং করণীয় নির্ধারণে স্পেশাল ব্রাঞ্চের এ্যাডিশনাল ডিআইজি তৌফিক মাহবুব চৌধুরীকে প্রধান করে অপর একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল হায়দার এবং পুলিশ সদর দপ্তরের ডিসিপ্লিন এবং প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।কমিটি কোনো পুলিশ সদস্য পেশাগত মান থেকে বিচ্যুত হচ্ছে কি-না বা অন্য কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কি-না এ সংক্রান্তে সার্বিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছে।
গত ২৪ জুন বুধবার বিকাল থেকে কক্সবাজার জেলায় ইতোমধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এতে বেরিয়ে আসছে বড় বড় কর্মকর্তাদের নাম। এতে কক্সবাজার জেলা পুলিশে আরো বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে একটি সুত্র জানায়। ইয়াবা সরবরাহকারী গোয়েন্দা শাখার এসআই বিল্লাল এখনো পলাতক রয়েছে। এর সহযোগী আরো বেশ কয়েকজন এসআই ও এসআই যেভাবেই হোক কক্সবাজারের থাকার তদবিরে রয়েছে। অনেকেই পুলিশের বিভিন্ন উর্ধবতন দপ্তরে তদবির অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।
একটি অনির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও অফিসার ইনচার্জ সহ অন্তত আরো ১৭ জনের মতো পুলিশ কর্মকর্তা বদলীর আদেশ আসতে পারে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।