৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস পালিত   ●  আরসা প্রধান আতাউল্লাহসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা   ●  কক্সবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত আটক   ●  হলফনামা বিশ্লেষণ: ৫ বছরে এমপি আশেকের সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি টাকার কাছা-কাছি   ●  ২১ দিন বন্ধের পর মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এল পন্যবাহি চারটি ট্রলার   ●  মহেশখালীতে সাবেক ইউপি সদস্যেকে পিটিয়ে হত্যা   ●  ভ্রাতৃঘাতি দেশপ্রেমহীন রোহিঙ্গা আরসা-আরএসও প্রসঙ্গে; এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর   ●  কক্সবাজারে রেল : শুরুতেই ইজিবাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ২০ টাকা ভাড়া রাতা-রাতি ৫০ টাকা!   ●  মাদক কারবারিদের হুমকির আতঙ্কে ইউপি সদস্য কামালের সংবাদ সম্মেলন   ●  সালাহউদ্দিন সিআইপি ও এমপি জাফরকে আদালতে তলব

কক্সবাজারে ট্রাফিক পুলিশের চাদাবাজি মাসিক অর্ধকোটি টাকা

traffic-police-ট্রাফিক-পুলিশ
কক্সবাজার পরিবহন সেক্টরে মুর্তিমান আতংকের নাম ট্রাফিক বিভাগের দুনীর্তিবাজ টিআই আব্দুর রউফ ও সার্জেন্ট জাকির হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে তাদের বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও হুমকি-ধমকির রোষানায়ে পড়ে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে সকাল সন্ধ্যা নানা অজুহাত দেখিয়ে বিভিন্ন জাতের গাড়ী আটক করে পরে সুযোগ বুঝে টাকার বিনিময়ে কিছু গাড়ী স্পটে ছেড়ে দিলেও অবশিষ্ট আটককৃত গাড়ী পুলিশ লাইনে পাঠিয়ে দিয়ে শুরু হয় বাণিজ্যের মহোউৎসব। ইতি পূর্বে ছাত্রলীগের এক কর্মীর মটর চাইকেল আটককে কেন্দ্র করে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশ ও ক্ষমাতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সাথে ব্যাপক সংর্ঘষে কক্সবাজারে শহরে এক ধরনের রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছিল।
এর পরে কিছু দিন আটক বাণিজ্য কমে গেলেও বর্তমানে আবরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগ। কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগের এধরনের আটক বাণিজ্যে পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা যেমনি রীতিমত অসহায় হয়ে পড়েছে তেমনি পরিবহণ ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার উপক্রম দেখা দিয়েছে।

সচেতন মহলের ভাষ্যমতে কক্সবাজার শহরে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থল হওয়ায় তারা আটক বাণিজ্যে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কক্সবাজার ট্রাফিক বিভাগে ধারবাহিকভাবে দীর্ঘ দিন ধরে এধরনের আটক বাণিজ্যে থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য পুলিশসুপারসহ সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামণা করেছে এলাকার পরিবহণ সংশ্লিষ্ট ও প্রাইভেট মটর চাইকেল ব্যক্তিরা।কক্সবাজার টমটম মালিক-চালক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন নানান অজুহাতে দিনের বেলায় তাদের টমটম গুলি আটক করে পরে সন্ধা নামার সাথে ট্রাফিক অফিসের প্রাঙ্গনে শুরু হয় বাণিজ্য। ট্রাফিক বিভাগের এসমব বাণিজ্য নিয়ে তারা বহুবার আন্দোলন করলে আদৌ তার কোন যথাযত সুরেহা পাচ্ছে না।

যার জন্য তারা তাদের পরিবহণ ব্যবসা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭ টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত সিভিল পোশাকে ট্রাফিক টিআই রউফ ও সাজেন্ট জাকির মোটর সাইকেল নিয়ে শহরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান করেন। এসময় তারা রিক্সা, টমটম ও সিএনজি থেকে নানা অজুহাত দিয়ে টাকা আদায় করেন। তাদের কথা মত কোন চালক টাকা দিতে স্বীকৃতি জানালে তার গাড়িটি আটক করে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে আসে।

এর পর অনেক দেনদরবার করে অবশেষে টাকার বিনিময়ে গভীর রাতে ছেড়ে দেয়া হয় ওইসব গাড়ী।করিম ও আজিজ নামের গাড়ী চালক বলেন, বিভিন্ন পরিবহণের গাড়ি সাপ্তাহে কয়েকবার করে আটক করেন ট্রাফিক পুলিশ। পরে গাড়ি আটক করে নিয়ে গেলেও গভীর রাতে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়। একটি গাড়ি বার বার আটক করে বার বার টাকা আদায় করার কারনে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে চালক ও মালিকরা।

শুধু তাই না, সময়ে অসময়ে ঘুষ আদায়,পরিবহণের বিভিন্ন কাউন্টার হতে মাসোহারা আদায়, ড্রাইভারদের ধমক দিয়ে চাঁদাবাজি, গাড়ী আটক বাণিজ্য, পুলিশ লাইনে দিদার নামের সিপাহী দিয়ে চাবি বানিজ্য, টোকেন বাণিজ্য, কেইচ রসিদ বাণিজ্যসহ সব অপকর্মের নেপথ্যে নায়ক টিআই আব্দুর রউফ ও সার্জেন্ট জাকির। সূত্রে জানিয়েছে, শহরে মাসিক চাঁদা ও ভ্রাম্যমান চাঁদা আদায়ের অভিজ্ঞতার থলি বেশি হওয়ায় ট্রাফিকের ওই কর্মকর্তারা মুর্তিমান আতংক বলেও মন্তব্য করেন অতিষ্ট পরিবহন চালকরা। তবে এসব অভিযোগ অকপটে স্বীকার করেন অভিযুক্ত সার্জেন্ট জাকির।

জানা গেছে, কক্সবাজার পরিবহন সেক্টরে ২ অভিযুক্ত কর্মকর্তার মাসিক চাঁদাবাজির পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা। টমটম, মোটর সাইকেল, সিএনজি ও ডিজেল চালিত অটো রিক্সা, বাস-মিনিবাস, মাইক্রো-হাইয়েস, ট্রাক-মিনিট্রাক ও ফিটনেস বিহীন লক্কর ঝক্কর গাড়ী থেকে এ চাঁদা আদায় করেন। অনেকেই হুমকি-ধমকির ভয়ে সরাসরি ট্রাফিক অফিসে এসে তার হাতে মাসিক চাঁদাও দিয়ে থাকেন বলে সুত্রে প্রকাশ।

তার চাঁদার খাতায় নাম না লিখিয়ে কোন চালক শহরে গাড়ি চালাতেও পারে না বলেও অভিযোগ। এমনকি শহরে কোন ভিআইপি গাড়ি প্রবেশ করলেও তাদের চাঁদাবাজির ভোগান্তির শিকার হয়।সূত্রে আরো জানায়,কক্সবাজারের বির্তকিত ট্রাফিক পুলিশের এ ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গাড়ী আটকের নামে গাড়ীর মালিকদের নানাভাবে হয়রাণির অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহনের এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি পরিবহণ সেক্টর থেকে প্রতি মাসে টিআই রউফ ও সার্জেন্ট জাকিরকে টাকা দেয়া হয়। তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দালালদের টাকা সংগ্রহ করেন। চাউল বাজারে যে সব ট্রাকে করে চাল আনা হয় ওই সব ট্রাক থেকেও চাঁদা আদায় করে বলে জানা গেছে।

সালাম নামে একজন মোটর সাইকেল আরোহী জানিয়েছেন, তার মোটর সাইকেলটি ৭দিনের মাথায় ৩দিন আটক করে পুলিশ। প্রতিবারে ৪ হাজার টাকা করে দিয়ে গাড়ী আনতে লাইনে গেলে দিদার নামের এক সিপাহীকে ৩শ’ টাকা দিতে হয়। ঘুষ-জরিমানা দিয়ে ভুক্তভোগিরা পুলিশ লাইনে গাড়ী আনতে গেলে দিদার নামের সিপাহীকে প্রতি গাড়ীতে ৩শত টাকা করে খরচ দিতে হয়।

এবিষয়ে কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের টিআই আব্দুর রউফ ও সার্জন্টে জাকির হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ট্রাফিক অফিসের একমাত্র কাজ হল ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও বৈধ লাইসেন্স বিহীন গাড়ি আটক করে জরিমানা আদায় করা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।