১ জুন, ২০২৩ | ১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ | ১১ জিলকদ, ১৪৪৪


শিরোনাম
  ●  দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কক্সবাজার পৌর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ১৩ নেতা বহিস্কার   ●  উখিয়ায় জমি দখলে নিতে খুনের হুমকির অভিযোগ   ●  বিদগ্ধজনদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য থেকে প্রতিপক্ষকে বিরত থাকার আহবান মেয়র প্রার্থী মাহাবুবের   ●  কক্সবাজার পৌরসভার উদ্যোগে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন   ●  কক্সবাজারে ওয়ার্ল্ডফিশ এর সিনার্জিস্টিক পার্টনারশীপ কর্মশালা   ●  সাগরে ইঞ্জিল বিকল হয়ে ১৩ দিন ভাসতে থাকা ২১ জেলে জীবিত উদ্ধার   ●  চকরিয়া ও টেকনাফে শীঘ্রই চালু হচ্ছে কউকের জোনাল অফিস   ●  মরিচ্যায় ভয়ংকর অপহরণকারী সিন্ডিকেট শীর্ষক সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ   ●  পেশীশক্তির প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে নৌকা বিজয় ঠেকানোর চেষ্টা বোকামী : মেয়র প্রার্থী মাহাবুব   ●  র‍্যাবের জালে ধরা পড়ল ৯ লাখ ইয়াবাসহ ৫ মাদক কারবারি: যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেপ্তার

এমপিদের সভাপতি মনোনীত হওয়ার বিধান ফিরছে না

023938haighcort_kalerkantho_picবেসরকারি স্কুল-কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মনোনীত হওয়ার বিধান বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন আপলি বিভাগও তা বহাল রেখেছেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন গতকাল সোমবার খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে চাইলে সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ড. ইউনুছ আলী আকন্দ।

গতকাল আপিল বিভাগের আদেশের পর ইউনুছ আলী আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রয়েছে। এখন থেকে এমপিরা ইচ্ছামতো নিজ এলাকার বেসরকারি কলেজ বা স্কুলের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি থাকতে পারবেন না।

হাইকোর্ট গত ১ জুন সংসদ সদস্যদের ইচ্ছামতো নিজ এলাকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ার বিধান বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। গত ৩১ জুলাই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল আবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, শিক্ষা বোর্ড ও সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে অনির্বাচিত লোকদের নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিশেষ ব্যবস্থাপনা কমিটিও গঠন করা যাবে না। নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি হতে হবে। এ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন করতে শিক্ষাসচিব, আইনসচিব ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়া হয়। দেশের যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে তা বাতিল করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বলা হয়।

হাইকোর্টের রায়ে ব্যবস্থাপনা কমিটি-সংক্রান্ত ২০০৯ সালের ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা’-এর ৫ ও ৫০ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে তা বাতিল করা হয়। রায়ের কপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত সব আইন ও বিধিমালা সংশোধন করতেও শিক্ষাসচিবকে বলেন আদালত।

রায়ে বলা হয়, বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯-এর ৫(১)(২) ও ৫০ ধারা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধ্যাদেশ-১৯৬১-এর ৩ ও ৩৯(২) ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ অধ্যাদেশের এ-সংক্রান্ত ধারায় এমন কোনো মতামত দেওয়া হয়নি যে, কোনো সংসদ সদস্যকে বিনা নির্বাচনে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান বা বিশেষ

কমিটি গঠন করা যাবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধ্যাদেশের আলোকে দেশের সব শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ডিগ্রি কলেজগুলোর প্রবিধানমালায় বিনা ভোটে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও বিশেষ কমিটি গঠনের কোনো বিধান থাকলে তা একই যুক্তিতে বাতিল ঘোষিত হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় সমান অবস্থা নিশ্চিত করতেই এটি করতে হবে। হাইকোর্ট গত ১ জুন দেওয়া রায়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন বিশেষ কমিটি অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে নতুন করে অ্যাডহক কমিটি করে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে নির্দেশনা দেন।

১৯৬১ সালে করা অধ্যাদেশের ক্ষমতাবলে ২০০৯ সালের ৮ জুন ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০০৯’ প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ আইনের ৫ ধারায় সংসদ সদস্যদের ইচ্ছামাফিক কমিটির সভাপতি হওয়া এবং ৫০ ধারায় বিশেষ কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। এ আইনে ২০১২ সালে রাশেদ খান মেননকে প্রধান করে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালে রিট আবেদন করেন ইউনুস আলী আকন্দ। হাইকোর্ট ওই বছরই এ বিষয়ে রুল জারি করেন। পরবর্তী সময়ে এ রুল অকার্যকর হয়ে যায়। এরপর সম্পূরক রিট আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায় দেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।