৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  কক্সবাজারে রেল : শুরুতেই ইজিবাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ২০ টাকা ভাড়া রাতা-রাতি ৫০ টাকা!   ●  মাদক কারবারিদের হুমকির আতঙ্কে ইউপি সদস্য কামালের সংবাদ সম্মেলন   ●  সালাহউদ্দিন সিআইপি ও এমপি জাফরকে আদালতে তলব   ●  কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি জাফর আলম   ●  ‘দিনে আত্মগোপনে, রাতে অস্ত্রের মহড়া বালু-পাহাড় খেকো তাহেরের!   ●  বিপুল ভোটে আবারও এমপি নির্বাচিত হয়ে কক্সবাজার-১ আসন শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া হবে   ●  আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক বিক্ষোভ, স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াইয়ের ঘোষণা   ●  এইচএসসিতে শতভাগ পাশে আবারো জেলায় শ্রেষ্ঠ রামু ক্যান্টনমেন্ট কলেজ   ●  রামুতে বালু-পাহাড় খেকো আবু তাহেরের ডেরায় যৌথ অভিযান   ●  টেকনাফে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ৫৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার : ৪ পাচারকারী আটক

একটি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় ধন্যবাদ সবাইকে!

প্রথমেই সকল প্রশংসা জ্ঞ্যাপন করছি সেই মহান জাতে পাকের প্রতি, যিনি আমাকে আপনাদের সকলের ভালবাসায় সিক্ত ও প্রিয় হওয়ার তৌফিক দিয়েছেন। আলহামদু লিল্লাহ!

কিছু স্পেশাল মানুষ,যারা আমার অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসার,তারা তাদের শত ব্যস্ততার মাঝেও আমাকে উইশ করেছেন। পরিবার বন্ধু-বান্ধব, ছোটবড় শুভানুধ্যায়ী সবার ভালবাসা পেয়ে সত্যিই আমি আপ্লুত। ভালবাসাই তো বেঁচে থাকার রসদ। সর্বপরি সবাইকে আবারও অনেক অনেক ধন্যবাদ। একক ভাবে রিপ্লাই দিতে না পারায় আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

লিখাটা একটু লম্বা হলেও হৃদয়ের কিছু অনুভূতি আছে যা প্রকাশ না করলে নই..
বয়স যত বাড়তে থাকে জন্মদিন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ব্যস্তানুপাতে কমে যেতে থাকে। তখন নিজের জন্মদিনে আগ্রহ কমে যায়, নতুন জন্মের প্রতি আগ্রহ বাড়ে। বাচ্চাদের জন্মদিনে নিজের কাছে যে পরিমাণ আনন্দ লাগে নিজের জন্মদিনে ততটা আনন্দ লাগে না বরং কেমন জানি একটা বিষাদ কাজ করে মনে।
অনেক দিন ধরেই মনে হচ্ছে নতুন প্রজন্মের জন্য কি রেখে যাচ্ছি আমরা, কি পাচ্ছে ওরা আমাদের থেকে। ভয় লাগে যখন মনে হয় ওদের দেখা ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলো এবং সেগুলো বাস্তবায়নের পথটা খুবই অদ্ভুত ও দুর্ভোগের হতে পারে। অন্য দেশ নিয়ে আমি জানিনা তাই চিন্তাও করি না। চিন্তাটা নিজের দেশ নিয়ে। দেশে ছোট-ভাই বোন আছে তাদের নিয়ে।

এই সময়ের COVID19 মহামারির প্রাদুর্ভাব ছাড়াও
আমাদের দেশের বর্তমান পরিবেশটা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। যেমন – নিরাপত্তার অভাব,পরিবেশ দূষণ, ভেজাল খাবার, ভালো শিক্ষা ও চিকিৎসার অভাব,মাদকের ছড়াছড়ি প্রভৃতি । যে সমস্যাগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ছোট ভাইবোনদের স্বপ্ন পূরণের জন্য সবচেয়ে বেশি ও বড় প্রতিবন্ধকতা। আমরা গলা উজাড় করে অনেকে বলি সমস্যা সমাধানের, প্রতিশ্রুতি দেয় নিরিহ, নিরপরাধ আলোকবর্তিকা ছোট ছোট ভাইবোনদের সাথে। আসলেই আমরা কিছুই করিনা শুধু শুধু ধোকাবাজি ছাড়া!
এই আলোকবর্তিকা, এই স্বপ্নগুলো কি এভাবেই হারিয়ে যাবে আমাদের সামান্য অনাদরে অবহেলায়? তাহলে অদুর ভবিষ্যতে প্রজন্মগুলো আমাদের কাছে কি আশা করছে কিংবা একটি সুন্দর সমাজ, দেশ বিনির্মাণে আমরা কি রেখে যাচ্ছি তাদের তরে ?

স্বার্থসিদ্ধির এই লিপ্সা থেকে আমরা নিজেকে কখন বেরিয়ে নিয়ে আসবো? ভেতরের মানুষটিকে পরার্থে আমরা কখন জাগাবো? টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠনের চিন্তায় কখন ভাবাবে??

এরকম অনেক অনেক চিন্তা নিজেকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে সারাক্ষণ…
প্রায় প্রতিদিনই আমি এইসব নিয়ে ভাবি। ভাবি এই সমস্যাগুলো থেকে সমাধানের কোন পথ আছে কিনা? সত্যি বলতে গেলে তেমন কোন কিছু ভেবে পাই না। আবার সোস্যাল মিডিয়া কিংবা ফেইসবুকে আমি দেখতাম একটা হতাশ জনগোষ্ঠী। যারা সুযোগ পেলেই নিজের যোগ্যতা দেখায় অন্যের সমালোচনা করে, গালি দিয়ে। যারা সকাল-বিকাল অভিযোগ করে যাচ্ছে। মেসেজে যাকে বা যে জিনিসটাকে গালি দিচ্ছে সেই বিষয়ের পোস্টে বা সেই ব্যক্তি বাহবা দিচ্ছে পাবলিক্যলি। এটা কঠিন একটা সংকট মনে হয় আমার। আবার এমন না যে, ভালো চিন্তা বা কাজ করার মানুষ নেই। ভালোও আছে, কিন্তু তা হারিয়ে যাচ্ছে দিনদিন। বাধ্য হয়ে একটা বিষয় খারাপ জেনেও মেনে নিতে হচ্ছে ধীরে ধীরে এবং একসময় এটা অভ্যেস হয়ে যাবে। যেমন খাবারে ভেজাল। ভালো-ভেজালহীন খাবার দেশে পাওয়া মুশকিল। কেননা সিস্টেম এমন হয়ে গেছে যে অনেকেই বুঝতেই পারছেনা যে তারাও অন্যায় করছে!

কারো সাথে আড্ডা দিতে গেলেই দেশ নিয়ে তখন সবার হতাশা বের হয়ে আসে । সবগুলো ফিল্ডেই যে ঘুণে ধরে গেছে তা-নিয়ে সবার ঐক্যমত্যে আসতে সময় লাগে না। কিন্তু কিভাবে এর সমাধান হবে তা নিয়ে কেউ একমত হতে পারেনা। সবাই পালিয়ে বাচার সিদ্ধান্ত নেয় শেষ পর্যন্ত। আমি নিজেও দিন দিন দ্বিধায় পড়ে যাচ্ছি। একজন বাচ্চা আমাদের দেশে এখন সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে বড় হয় না। আমার ছোটভাই,ভাগ্নেকে দেখি। চিন্তা ভাবনা খুবই অদ্ভুত। কোন কিছু করার আগেই চিন্তা করে ফেলে এটায় লাভ কি হবে!
কেননা গেইম খেলে গেইমের আইডি বিক্রি করে নাকি টাকা কামাই করছে তার ক্লাসমেট কেউ। যে বয়সে একটা বাচ্চা মাঠে খেলার কথা চিন্তা করবে, চিন্তা করবে বড় হয়ে এটা করবে ওটা করবে, কিংবা স্বপ্ন দেখবে এখানে যাওয়ার-ওখানে ঘুরার, মনে থাকবে হাজারও প্রশ্ন সেই বয়সে সেই বাচ্চা গেইম খেলে টাকা কামাই করার স্বপ্ন দেখে, ফেইসবুক পেইজ খুলে চিন্তা করে কিভাবে টাকা আয় করবে! মাদকের কথা নাই বললাম! খুবই উদ্ভট একটা অবস্থা। এর থেকে আমাদের বের হয়ে আসা খুবই জরুরী । নয়ত ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা খুব অপরাধী হয়ে থাকবো।

এই অবস্থা থেকে উত্তোরনে সামষ্টিকভাবে কাজ না করলে, সবাই চেষ্টা না করলে দিন দিন অবস্থা খারাপই হতে থাকবে। ভয় লাগে অচিরেই ঘরে ঘরে হয়ত আমরা দেখব নানান ব্যাধি, অন্যায়-অবিচারের হাত থেকে হয়ত কেউই রেহাই পাবো না, মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ ও মেরুদণ্ডহীন জাতিতে পরিণত হবো আমরা। যার যার অবস্থা থেকে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন। নয়ত নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যখন প্রশ্ন করবে? কি কারণে তাদেরকে এমন একটা পরিবেশে বড় করলাম আমরা, তাদের জন্য রেখে গেলাম এমন একটা পৃথিবী, তখন উত্তর দেয়ার কিছু থাকবে না আমাদের।

আসুন আমরা নিজেরা ভালো কিছু করার চেষ্টা করি, সচেতন হই। সুন্দর একটা পৃথিবী আসুক নতুনদের জন্য, আমাদের জন্য। আমার জন্মদিনে সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা নিয়ে।।

দোয়া কামনায় :
মোহাম্মদ ফয়সাল
সহকারী শিক্ষক, খউবি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।