৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  আরসা প্রধান আতাউল্লাহসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা   ●  কক্সবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত আটক   ●  হলফনামা বিশ্লেষণ: ৫ বছরে এমপি আশেকের সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি টাকার কাছা-কাছি   ●  ২১ দিন বন্ধের পর মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এল পন্যবাহি চারটি ট্রলার   ●  মহেশখালীতে সাবেক ইউপি সদস্যেকে পিটিয়ে হত্যা   ●  ভ্রাতৃঘাতি দেশপ্রেমহীন রোহিঙ্গা আরসা-আরএসও প্রসঙ্গে; এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর   ●  কক্সবাজারে রেল : শুরুতেই ইজিবাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ২০ টাকা ভাড়া রাতা-রাতি ৫০ টাকা!   ●  মাদক কারবারিদের হুমকির আতঙ্কে ইউপি সদস্য কামালের সংবাদ সম্মেলন   ●  সালাহউদ্দিন সিআইপি ও এমপি জাফরকে আদালতে তলব   ●  কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি জাফর আলম

উখিয়ায় রেজুখালের বালি সম্পদ অরক্ষিত

UKHIYA PIC 06.05.2015
বর্ষায় জলাবদ্ধতা, বন্যায় চরম দূর্দশা আর শুষ্ক মৌসুমে খাল,বিল নদী-নালা শুকিয়ে মরুময় চিত্রে সেচ কাজ বিঘিœত হওয়ার মত পানি সংকটের ধারাবাহিকতায়ও অবৈধ উপায়ে বালি উত্তোলন থামছে না। সরকার দলীয় কতিপয় নেতাকর্মীর ছত্রছায়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে উখিয়ার খরস্রোতা রেজুখাল থেকে লুটপাট করে বালি উত্তোলনের ফলে এলজিইডি কর্তৃক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গাইডওয়াল ধ্বসে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। গ্রামবাসীর দাবী নির্বিচারে বালি উত্তোলনের ফলে বছর বছর নদী গর্ভে বিলিন হচ্ছে বসতভিটা ও ফসলী জমি।
বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত রেজুখালের মনিরমার্কেট এলাকা ঘুরে স্থানীয় গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলা মহিলা আ’লীগ নেত্রীর বড় ছেলে শাহজাহানের তত্ত্বাবধানে রেজুখাল থেকে অবৈধ বালি উত্তোলনের মহোৎসব চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। গত বর্ষা মৌসুমে বালি উত্তোলনের সময় তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলাম তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেন। এর আগে উখিয়া থানা পুলিশ অবৈধ বালি উত্তোলনের অভিযোগে বালুখেকো শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করলেও থামেনি বালু পাচার বাণিজ্য। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম খান জানান, শাহজাহানের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রেজুখাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুকিয়ে মরুময় রেজুখালের বুক চিরে বালি উত্তোলনের লংকাকান্ড চলছে। ৭/৮টি ট্রাকে বালি ভর্তি করছে শত শত শ্রমিক। এসময় বালি উত্তোলনের ছবি ধারণ করতে গেলে বালুখেকো শাহজাহান বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করে বলেন, রেজুখালের বালি মহালটি সে একসনা ইজারা নিয়েছে। ঘটনাস্থলে নামপ্রকাশ না করার সত্ত্বে একাধিক গ্রামবাসী জানান, অবৈধ বালি উত্তোলনের ফলে রেজুখালের গাইডওয়াল ধ্বসেপড়ার উপক্রম হয়েছে। বর্ষাকালে খালের পাড়ে বসবাসরত বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। এঘটনা নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। সোনারপাড়ার ভূমি অফিসের তহসিলদার হেফাজ আহমদ জানান, রেজুখালের বালি মহাল ইজারার ব্যাপারে তার জানা নেই। এছাড়াও উখিয়ারঘাট বনবিট কর্মকর্তা রুহুল আমিনের ছত্রছায়ায় বালুখালীর ছড়া বালি মহাল ইজারার নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট পাহাড় কেটে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করছে। বিট কর্মকর্তা জানান, তাদেরকে পাহাড় কেটে বালি উত্তোলন না করার নিদের্শ দিলেও তা তারা মানছে না।
উপজেলার থাইংখালী খাল, বালুখালী, গয়ালমারা, হাজিরপাড়া, দোছরী, হিজলিয়া, মরিচ্যা, ইনানী ও নিদানিয়াসহ ১০টি স্পট থেকে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করে মৌসুমে কোাটি টাকা বাণিজ্যের মাধ্যমে এলাকার বালুখেকো সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিলেও দেখার কেউ নেই। মাঝে মধ্যে পুলিশ হানা দিয়ে কয়েকটি বালির ট্রাক আটক করলেও তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা রুজু না হওয়ার কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে অবাধে পাহাড় কেটে ও খাল খনন করে বালি বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লোল বিশ্বাস জানান, অবৈধ বালি উত্তোলনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ার কারণে বালুখেকো ও পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।