৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ | ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫


শিরোনাম
  ●  আরসা প্রধান আতাউল্লাহসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা   ●  কক্সবাজারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত আটক   ●  হলফনামা বিশ্লেষণ: ৫ বছরে এমপি আশেকের সম্পদ বেড়েছে ২ কোটি টাকার কাছা-কাছি   ●  ২১ দিন বন্ধের পর মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে এল পন্যবাহি চারটি ট্রলার   ●  মহেশখালীতে সাবেক ইউপি সদস্যেকে পিটিয়ে হত্যা   ●  ভ্রাতৃঘাতি দেশপ্রেমহীন রোহিঙ্গা আরসা-আরএসও প্রসঙ্গে; এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর   ●  কক্সবাজারে রেল : শুরুতেই ইজিবাইক চালকদের দৌরাত্ম্য ২০ টাকা ভাড়া রাতা-রাতি ৫০ টাকা!   ●  মাদক কারবারিদের হুমকির আতঙ্কে ইউপি সদস্য কামালের সংবাদ সম্মেলন   ●  সালাহউদ্দিন সিআইপি ও এমপি জাফরকে আদালতে তলব   ●  কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন এমপি জাফর আলম

উখিয়ায় পানির জন্য হাহাকার

SAMSUNG CAMERA PICTURES
বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের ওয়ালিদং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সৃষ্ট খরস্রোতা রেজুখাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে উখিয়ার ছোট-বড় ১২ খাল এখন পানি শূণ্য হয়ে পড়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশংকা জনক ভাবে গভীরে চলে যাওয়ার ফলে টিউবওয়েলে পানি নেই। যার ফলে ৫০ শতাংশ বাসা বাড়িতে দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার পানির সংকট। সেচ পাম্প অচল হয়ে পড়ার কারণে বোরো চাষাবাদ পড়েছে হুমকির মুখে। এমতাবস্থায় পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির জন্য হাহাকার কৃষকেরা ফসল বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
সরেজমিন, সীমান্তের রেজু আমতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খালে অজস্র ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের পাথরের ছড়াছড়ি। স্থানীয় আদিবাসী মাস্টার তোয়াইছাচিং কারবারি জানান, এ রেজুখালের পানি ইতিপূর্বে কোনদিন শুকায়নি। পানির সাথে বয়ে যাওয়া পাথর সংগ্রহ করে এখানকার অনেক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করেছে। স্থানীয় ডাক্তার ছুরুত আলম জানান, খালের উজানে অপরিকল্পিত মাটির বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ, নির্বিচারে পাথর উত্তোলন ও খাল জবর দখল করে স্থাপনা নিমার্ণ করার ফলে এ খালটি শুকিয়ে এখন মরাখালে পরিণত হয়েছে। খালের পাড়ে বসবাসরত একাধিক লোকজন জানান, খাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এখানকার অধিবাসীরা বর্তমানে তীব্র পানি সংকটে পড়তে হয়েছে। এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিদের ধারণা মতে রেজুখাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে এ উপজেলার অন্যান্য খাল গুলোতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, যে কারণে সর্বত্রে পানি সংকটে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে।
উখিয়া বাজারের গৃহিনী রেনুআরা বেগম(৪৫) জানায়, তার বসতবাড়ীর নলকূপের পানি ইতিপূর্বে কোন দিন শুকায়নি। গত কয়েকদিন ধরে পানি শুকিয়ে মটর পুঁড়ে যাওয়ার ফলে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি খাবার পানি সংকটে পড়তে হয়েছে। হরিণমারা গ্রামের মৌলভী আজিজুল হক জানায়, সে উপকূলের শামলাপুর মসজিদে খতিব হিসেবে দায়িত্বপালন করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। গত কয়েকদিন থেকে মসজিদে অগভীর নলকূপে পানি না ওঠার কারণে মুসল্লীদের পানি নিয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ফলিয়াপাড়া আলিমুদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম. আব্দুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের একমাত্র টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পার্শ¦র্তী গ্রামের বাসাবাড়িতে গিয়ে তৃষ্ণা মেটাতে হচ্ছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন জানান, এ উপজেলায় ৩৩ হাজার ৫শ’ পরিবারের মধ্যে প্রায় ২৭ হাজার টিউবওয়েল রয়েছে। তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশংকা জনক ভাবে নিচে নেমে যাওয়ার ফলে প্রায় ৫০ শতাংশ টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে আবাসিক এলাকায় খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার জানান, ৬ হাজার ২শ’ ৮৫ হেক্টর বোরো চাষাবাদে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ডিজেল ও বিদ্যুৎ চালিত ২০২৭টি অগভীর সেচ যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, পানি না পাওয়ার কারণে প্রায় ৪০ শতাংশ সেচ যন্ত্র অচল হয়ে পড়ে কৃষকদের পানি সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এদিকে বিদ্যুৎ দিয়ে চালিত কিছু কিছু সেচ পাম্পে পানি পাওয়া গেলেও লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃষকেরা চাহিদামত জমিতে পানি দিতে পারছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। জানতে চাওয়া হলে পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম নুর হোসেন জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে রাতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এখানে ৮ মেগাওয়াড বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যা দিয়ে ভাগাভাগি করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে লোডশেডিং হচ্ছে। তবে এসমস্যা নাও থাকতে পারে বলে তিনি ব্যক্ত করেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।