২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ | ১২ পৌষ, ১৪৩২ | ৬ রজব, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  দুই দিন ধরে নিখোঁজ প্রবাল নিউজের প্রতিবেদক জুয়েল হাসান, থানায় জিডি   ●  গ্রামে গ্রামে আনন্দের স্রোত   ●  সিবিআইউ’র আইন বিভাগের ১৭তম ব্যাচের বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন   ●  ক্ষোভ থেকে হত্যার ছক আঁকেন অপরাধী চক্র   ●  রামুর ধোয়াপালংয়ে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী অপহরণ : ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল লুট   ●  খুনিয়াপালংয়ে বিএনপি সভাপতির সহযোগিতায় শতবর্ষী কবরস্থান দখলের পাঁয়তারা   ●  কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস ১২ ডিসেম্বর   ●  বৌদ্ধ সমিতি কক্সবাজার জেলা কমিটি গঠন সভাপতি অনিল, সম্পাদক সুজন   ●  সভাপতি পদে এগিয়ে ছাতা প্রতিকের প্রার্থী জয়নাল আবেদিন কনট্রাক্টর   ●  প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে উখিয়ার নুরুল হকের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যা

উখিয়ার গ্রামাঞ্চলে ডিজিটালের ছোঁয়া

digital-bangladesh
কক্সবাজারের উখিয়ার গ্রামাঞ্চলে ডিজিটালের ছোঁয়া লেগেছে। গ্রামের ঘরে ঘরে মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলছে। ঘরে বসে সাধারন মানুষ দৈনিক সংবাদ পত্র, বহিঃ বিশ্বের সংবাদ, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ মানুষের মৌলিক চাহিদা ইন্টার নেটের মাধ্যমে জেনে যাচ্ছে মুহুর্তের মধ্যে। আর এসব কারনে এখানকার গ্রামাঞ্চল থেকে মৌলবাদী চিন্তা, কু-সংস্কার, অন্ধ বিশ্বাস ও কুপমন্ডুকতা ঝেটিয়ে বসেছে ধীরে ধীরে। গ্রামের অশিক্ষিত নারী পুরুষ ও যুবক যুবতীরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও এনজিও পরিচালিত স্কুলে গিয়ে শিক্ষা গ্রহন সহ বিভিন্ন উপায়ে নিজেকে শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করছে। অভিবাবকদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা ফিরে এসেছে। তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে একটি শিক্ষিত সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য ছেলে মেয়েদের নিয়মিত বিদ্যালয় মুখী করাচ্ছেন। সর্বত্র সচেতনতা ফিরে আসায় সাধারণ বসতীদের গরীবানা হাল কেটে যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে। আগের দিনের মত বসত ঘরের করুন দশা খুবই কম চোখে পড়ছে। গ্রামে গ্রামে প্রতিদিন নতুন নতুন টিনের ঘর ও পাকা দালান হচ্ছে। ১০/২০ গ্রাম ঘুরে ছনের চাউনি ঘর সহসেই চোখে পড়েনা।
একেবারে হত দরিদ্র পরিবারও এখন টিনের চাউনি ঘরে বসবাস করছেন। এদের মধ্যে গরীব শ্রেনীর অনেকেই বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে টিনের ঘর করছেন। গ্রামে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতনতা বেড়েছে। এখন প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে স্যানিটারী ল্যাট্রিন রয়েছে। অসুস্থ্য লোকেরা এখন বৈদ্য, উঝা, গ্রাম্য কবিরাজের কাছে গিয়ে ঝাট ফোঁক গ্রহন করেনা। তারা নিকটস্থ হাসপাতালে গিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়। নবজাতকদের বিষয়ে প্রসুতী মায়েরা ব্যাপক সচেতন। জন্মের পর পরই শিশুদের নিকটস্থ ঠিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শমতে শিশুদের ঠিকার ডোজ প্রয়োগ করাচ্ছেন। গ্রাম থেকে বিনোদন উৎসবে আগের মত পালা গান, জারী গান, পুঁথি পড়া অনুষ্টান হারিয়ে গেছে, রেডিওর কদর ও নেই। সেখানে ঘরে ঘরে টিভি, ভিসিআর, ভিসিডি, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ডিস এন্টেনা জায়গা করে নিয়েছে। গ্রামে সমাজবদ্ধ জীবন ঠিকই আছে। সামাজিক শালিস বিচার হয়ে থাকে। তবে সমাজপতিদের অহেতুক খবরদারী কমেছে। সমাজপতিদের বৈঠকখানা ও কাচারী ঘরের অস্থিত্ব দিন দিন বিলিন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামের মেয়েরাও এখন পুরুষদের মত মাঠে কাজ করে। কৃষি পেশায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। গ্রামে বসতী পরিবারের মধ্যে শতকরা হিসাবে ৯০ ভাগই কৃষক পরিবার। কৃষিকাজ থেকে তাদের সংসার চলে। তবে এদের মধ্যে মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যা বেশি। শতকরা ১০ ভাগ হল ধনী কৃষক। কৃষি কাজ থেকে তাদের সংসার চলে। গ্রামের নিম্ন, মধ্যবিত্ত শ্রেনীর শতকরা ১০/১৫ ভাগ মানুষ নিজেদের জমি ছাড়াও অন্যর জমি বর্গা নিয়ে কাজ করে। এছাড়াও একবারে জমি জমা নেই এমন লোকজন সংসার চালায় নানা পেশার কাজ করে। বেকার সমস্যা তেমন নেই। এখকানকার গ্রাম গুলোতে এখনো আদি নিয়মের সমাজবদ্ধ বসবাস চালু আছে। ওই নিয়মে ৩০/৪০টি পরিবার নিয়ে একেকটি সমাজ গঠন এবং প্রতিটি সমাজে ২ থেকে ৪ জন সমাজপতি (সর্দার) রয়েছে। গ্রামে সমাজবদ্ধ জীবনে বিয়ে অনুষ্টান সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মী অনুষ্টান সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে সকলে মিলে মিশে করে থাকে। ওই সমাজ ব্যবস্থায় ধর্মীয় আচার পালনে উপদেশ দেওয়া হয়। তবে গ্রামে এখন আর আগের মত শালিস বিচার হয়না। সরকারী আইন, প্রশাসন বরাবর সবাই বিচারপ্রার্থী হয়ে থাকে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।