২৩ অক্টোবর, ২০২৫ | ৭ কার্তিক, ১৪৩২ | ৩০ রবিউস সানি, ১৪৪৭


শিরোনাম
  ●  ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের হুমকিতে নিরাপত্তাহীন পরিবার, চার সন্তান স্কুলে যাওয়া বন্ধ   ●  রামুতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা রিজনের নেতৃত্বে এক ব্যক্তির দোকান দখলের অভিযোগ, চাঁদাবাজি মামলায় জিটু কারাগারে   ●  গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে হুমকি অভিযোগ ৪ এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে   ●  কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে স্কিলস অ্যান্ড ইনোভেশন কম্পিটিশন অনুষ্ঠিত   ●  আলোচিত ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে লুটপাট, পরে রফাদফা!   ●  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ   ●  কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল, প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ   ●  হলদিয়ায় ইমরানের ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে উধাও ৩ যুবক   ●  দুর্ধর্ষ প্রতারক দিদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি   ●  ইয়াবাসহ পুলিশে সোপর্দ, চোর সন্দেহে চালান, এলাকায় ক্ষোভ

অসত্য সংবাদ ও স্বপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের চিন্তা,বিবেকের,বাক্্ ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের ও সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হলেও ইদানিং আমরা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা উপেক্ষা করার জন্য তা করতে নিরাপদ মনে করি না। সুনাগরিক হিসেবে অসত্য সংবাদ ও অসত্য স্বপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাও আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। গত ১৩/৮/২০২৩ তারিখ দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় প্রথম পৃষ্টায় ’বিদায়ী জেলা জজের রেকর্ড মামলা নিস্পত্তি’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের একজন সুনাগরিক ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবী হিসেবে কিছু অংশের তীব্র প্রতিবাদ করছি। সংবাদ প্রতিবেদনে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ২জনকে মৃত্যুদন্ড ও ৩জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে লেখা হয়েছে। সিনহা হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের পিপি,এপিপি ৩জন ও বাদীর পক্ষে মোঃ মোস্তফা ও আমি নিয়োজিত আইনজীবী ছিলাম এবং আমি সকলের সিনিয়র ছিলাম বিধায় জ্ঞাত আছি যে সিনহা হত্যা মামলার রায়ে ২জনের মৃত্যুদন্ড, ৬জনের যাবজ্জীবন ও ৭জন খালাস পেয়েছেন। দন্ডিতরা মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে আপিল করেছেন যা ক্রমানুসারে শুনানীর অপেক্ষায় আছে। জেলা নাজির বেদারুল আলমের সুত্রে সংবাদটি তৈরী করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ আছে। সিনহা হত্যা মামলার রায়টি সাক্ষ্যনির্ভর,যুক্তিনির্ভর,আইনানুগ,নিরপেক্ষ ও সুন্দর রায় হয়েছে। সিনহা হত্যা মামলার রায় নিয়ে বিভ্রান্তিকর খন্ডিত সত্য প্রকাশ করা,বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা কার স্বার্থে,কার ইন্ধনে করা হচ্ছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। সিনহা হত্যা মামলার রায়কে কেউ নিজের ব্যক্তিগত ক্রাইমের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনৈতিক। গত ৫/৮/২০২০ তারিখ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩,টেকনাফ,তামান্না ফারাহ কর্তৃক মেজর(অব) সিনহার বড় বোন শরমিন শাহারিয়া ফেরদৌসের ওসি প্রদীপ গংদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারী দরখাস্ত এজাহার হিসেবে গণ্য করে র‌্যাবকে তদন্তভার দেওয়ার দিন থেকে ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা বন্ধ হয়েছিল প্রতীয়মান হয়। দায়রা জজ আদালতে রায় হয়েছে গত ৩১/১/২০২২ তারিখ। ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা বন্ধের জন্য কৃতিত্ব দিতে হলে, তা জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামান্না ফারাহকে দিতে হবে। এই সত্য অস্বীকার করা হবে চরম ভন্ডামী।

একই দিনের দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় ’সহিমোহর নকলের বৈধতা ও গ্রহনযোগ্যতা প্রসঙ্গে’ শিরোনামে জনস্বার্থে প্রকাশিত কলামে উল্লেখ করা হয়েছিল হাইকোর্টের সার্কুলার অমান্য করে কক্সবাজারে এই কথিত নাজিরই প্রশাসনিক কর্মকর্তার স্থলে নিজে প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তা হিসেবে স্বাক্ষর করে সহিমোহর নকলের বৈধতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করছেন।

বিদায়ী জেলা জজ কক্সবাজারে মামলা নিস্পত্তির রেকর্ড সৃষ্টি করা সংক্রান্তে যে তথ্য দিয়েছেন তা পরস্পর বিরোধী ও বিভ্রান্তিকর। বিগত ১১/৩/২০২৩ তারিখ জেলা জজের সম্মেলন কক্ষে বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতীতে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে বিচারাধীন ফৌজদারী,দেওয়ানী মামলার সংখ্যা,নিস্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা, দ্রæত মামলা নিস্পত্তির সমস্যা ও সাম্ভাব্য সমাধান এবং আগের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যকরীর অবস্থা ইত্যাদি নিয়ে সম্মেলনে আলোচনার জন্য একটি লিখিত প্রতিবেদন পেশ করার রেওয়াজ প্রচলিত ছিল। এই বছরের সম্মেলনে জাজশীপের পক্ষ থেকে কোন প্রতিবেদনই আলোচনার জন্য পেশ করা হয় নাই, যা আমার অতিথি কলামে আমি উল্লেখ করেছিলাম। সুতরাং সঙ্গত কারণে অনিভিজ্ঞ, অকালপক্ষ নাজিরের দেওয়া সংবাদপত্রে প্রকাশিত পরস্পর বিরোধী,অস্পষ্ট তথ্যগুলি আমাদের কাছে নির্ভুল,বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহনযোগ্য মনে না হওয়াই স্বাভাবিক।

দাবী করা হয়েছে মার্চ ২০২২ থেকে জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ৫১৩ ধারা মতে ১৮ কোটি ৬০ লক্ষ ৩৬ হাজার ৫০০ টাকা জামানত আদায় করে দিয়েছেন। ৪৫ ডিএলআর (এডি) ৮পৃষ্টায় ও ৯বিএলডি(এডি) ৩পৃষ্টায় প্রকাশিত মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবং ৩৩ ডিএলআর ১৪৬ পৃষ্টায়,১ বিএলডি ৬৬ পৃষ্টায় ও ১ বিএলসি ৩০ পৃষ্টায় প্রকাশিত হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শর্তযুক্ত জামিন অবৈধ,জামানত নিয়ে জামিন প্রদান বেআইনী। বিগত ১৫/৩/২০২৩ তারিখ ফৌজদারী মিচ ৫৪১৯৪/২০২২ নম্বর মামলায় বিচারপতি মোহাম্মদ সেলিম ও বিচারপতি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন খান কর্তৃক ঘোষিত রায়ে একজন দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী সম্পর্কে যেভাবে পরিস্কার জ্ঞান থাকা প্রয়োজন তা কক্সবাজারের দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের নাই এবং প্রশ্ন তুলেছেন আইনের বিধান বুঝতে না পারলে তিনি দায়রা জজের দায়িত্ব কিভাবে পালন করেন? বিদায়ী দায়রা জজ কর্তৃক জামানতসহ জামিন দেওয়ার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করা হয়। হাইকোর্টে রায়টি প্রদান করা হয়েছে ১৫ মার্চ ২০২৩ তারিখ,জেলা নাজিরের নিকট প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী তৈরী করা সংবাদ প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে বিদায়ী দায়রা জজ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত জামানত আদায় করেছেন। বেপরোয়রাভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে জেদ করে হাইকোর্টের রায় অমান্য করে সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন আদালতের অবশ্যপালনীয় বিধান লংঘন করে জেলা ও দায়রা জজের পদে থাকার যোগ্যতা বিদায়ী দায়রা জজ হারিয়েছিলেন।

বিগত ১৫/১/১৯৮৫ তারিখ কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মোট ১৬জন দায়রা জজ দেখার সুযোগ হয়েছে আমাদের। তাদের মধ্যে এম,এম,রুহুল আমিন প্রধান বিচারপতি, মোঃ আনোয়ার উল হক আপিল বিভাগের বিচারপতি এবং ভবানী প্রসাদ সিংহ ও মোঃ এমদাদুল হক হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হয়েছেন। আগে বিদায় নেওয়া ১৫জন জেলা জজের কেউ সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক প্রকাশিত ’ক্রিমিনাল রুলস এন্ড অর্ডারস’ এর ভলিউম-১ এর ৩১১ পৃষ্টায় উল্লেখিত বিচারকদের ১৭ ধারার আচরণবিধি লংঘন করেন নাই। তিনি সকলকে হতবাক করে দিয়ে প্রকাশ্যে বলতেন,আমি ৫০/১০০ বছর আগের পুরানো আইন মানি না,আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ,স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আছি। বিদায়ী জেলা জজ সবগুলি আচরণবিধিই বেপরোয়াভাবে প্রকাশ্যে বার বার লংঘন করেছেন। কক্সবাজার জেলা হওয়ার আগে আমি চট্টগ্রাম দায়রা জজ আদালতে থাকা কালে আরো ৩জন জেলা জজ দেখার সুযোগ পেয়েছি। আমার ৪৫ বছর আইন পেশার জীবনে দেখা ১৯জন জেলা জজের মধ্যে সম্পূর্ণ বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর, হাইকোর্টের রায়, আদেশ, নির্দেশ, সার্কুলার অমান্যকারী জেলা জজ দেখেছি কেবলমাত্র মোহাম্মদ ইসমাইল সাহেবকে। সব সময় আত্মপ্রচারণায় ব্যস্ত,বিদায় সংবর্ধনা নিতে লালায়িত অতি তৎপর,অতি উৎসাহী জেলা জজ আগে কোন দিন দেখি নাই। ১০ আগস্ট দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়ার পরও প্রতি দিন প্রায় সপ্তাহব্যাপী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বক্তৃতার ভিডিও ফুটেজ প্রচার কেন করা হচ্ছে? তিনি কি কক্সবাজার থেকে নির্বাচন করবেন? তার করা সকল মামলার আদেশ/রায়ের গোপনীয় কথা কিভাবে জনসমক্ষে প্রচার করছেন? আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? ৫০০ আইনজীবী তার নাম দিয়ে লাখ লাখ টাকা নেন,তিনি চলে গেলে ৫০০ আইনজীবী বেকার হবেন,কক্সবাজারে দশ হাজার লোক বেকার হবেন বলার ভিত্তি কি? তার ডিসি/এসপির মত গোয়েন্দা সংস্থা নাই। তিনি ডিসি/এসপির মত সাধারণ ১০হাজার মানুষের সাথে অবাধে যোগাযোগ রাখতে পারেন না,বিচারকদের আচরণবিধিতে নিষেধ আছে।

বিদায়ী জেলা জজ গত ২১/৫/২০২২ তারিখ লীগ্যাল এইড কমিটি একটি সমন্বয় সভা ডেকেছিলেন যাতে কক্সবাজার জেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান,উপজেলা চেয়ারম্যান,জেলা চেয়ারম্যন,পৌর চেয়ারম্যান,জেলার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা,আইন কর্মকর্তা ও সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। তার র্দীঘ বক্তৃতার মধ্যে তিনি বলেছিলেন কক্সবাজার জেলার অন্তত ৫০০ আইনজীবী দালালী করেন,তার নাম দিয়ে ২০/৩০ লাখ টাকা নিয়ে ফেলেছেন। দুর্বল বারের নেতৃত্বের পক্ষে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বারের সভাপতি এডভোকেট ইকবালুর রশিদ আমিন(সোহেল) তার বর্ক্তৃতায় চ্যালেঞ্চ করে বলেছিলেন কতজন দালাল আইনজীবীর নাম আপনি বারে পাঠিয়েছিলেন? এখন দালাল আইনজীবীদের তালিকা দেন আমরা কি ব্যবস্থা গ্রহন করি দেখবেন। জেলা জজের মত দায়িত্বশীল পদে থেকে জেলার এতগুলো জনপ্রতিনিধির সামনে ৫০০ আইনজীবীর বিরুদ্ধে অনির্দিষ্ট,ভূয়া অভিযোগ করে আইনজীবীদের জনসমক্ষে হেয়প্রতিপন্ন করেছেন,যা অপ্রত্যাশিত। তিনি সেই ৫০০ জন আইনজীবীর তালিকা দিতে পারেন নাই। বরং তিনি তার অপকর্ম আরো বাড়িয়ে দিলে বিগত ২৬/১১/২০২২ তারিখের কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সভায় তার বিরুদ্ধে আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং তার আদালত বর্জন ৪দিন ব্যাপী চলে। বর্জনের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্সবাজার সফরের সময় নেতাদের অনুরোধে স্থগিত করা হয়েছিল,এখনও বাতিল করা হয় নাই। ইতিমধ্যে ২০২৩ এর নির্বাচনে বিদায়ী জেলা জজ নজির বিহীনভাবে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে টেলিফোনে,সরাসরি অনুরোধ করে প্রেসিডেন্ট/সেক্রেটারী হিসেবে এডভোকেট সোহেলকে পুনঃনির্বাচিত হতে, সেক্রেটারী এডভোকেট তৌহিদকে একই পদে পুনঃপ্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে দেন নাই। উনি আইনজীবীদের তাকে বিদায়ী সম্বর্ধনার যে বিশেষ ব্যবস্থা করেছিলেন তাতে আইন কর্মকর্তাগণ সহ মাত্র ৪০জন তার সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। সিনিয়র আইন কর্মকর্তা ও বারের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচিত সিনিয়র সদস্য জিপি ইসহাক,নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি ও সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম সিকদার সহ প্রায় অর্ধেক আইনকর্মকর্তাও অনুপস্থিত ছিলেন। ১১০০ জন আইনজীবীর মধ্যে ৪% এর কম উপস্থিত ছিলেন। তথাকথিত নাগরিক স¤¦র্ধনায় ২০/২৫ জন উপস্থিত ছিলেন যাদের মধ্যে প্রায় ফৌজদারী মামলার জামিনে থাকা বিচারাধীন আসামী বা আসামীর আত্মীয়স্বজন। পৌর মেয়র,কাউন্সিলরগণ ছিলেন না কেন? আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত হওয়ার পর অবসরে যাওয়ার পরও এত আত্মপ্রচারণার প্রয়োজন কি? উনি কি নজির বিহীনভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করছেন ? সম্প্রতি এক মামলায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক ১২টার সময় জামিন নামজ্ঞুর করে হাজতে প্রেরণের আদেশের বিরুদ্ধে সার্টিফাইড কপি না দিয়ে একই দিন বেলা ৩ টার সময়ই ’দীর্ঘ হাজতবাস বিবেচনায়’ আসামীকে জামিন মজ্ঞুর করায় সংক্ষুব্ধ বাদীপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করেন। অবৈধভাবে জামিন প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের উপস্থিতিতে পর পর দুইদিন শুনানীর সময় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন মজ্ঞুর না করে কক্সবাজার দায়রা জজ সম্পর্কে হাইকোর্ট বিভাগ যে মন্তব্য করেছেন তা সংবাদপত্রে, টিভিতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার ও ভাইরাল হয়েছিল। দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকাও অন্যান্য জাতীয় দৈনিকগুলোর মত সচিত্র সংবাদ প্রকাশ করেছে। মাননীয় বিচারপতি মোঃ হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ মন্তব্য করেছেন, আপনি বাজার বসিয়েছেন,আপনার মত বিচারক বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর। আপনি ভুল করেন নাই,নিজের আদেশ টেম্পারিং করে আপনি ক্রাইম করেছেন,অপরাধ করেছেন। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের মন্তব্যের সাথে কারো দ্বিমত আছে বলে জানা যায় নাই।

উনার স্বীকৃতমতে ২৭৮টা ফৌজদারী মিচ মামলা শুনানীর দিন না দিয়ে বা নামজ্ঞুর না করে বস্তাবন্দি করে রেখে দিয়েছেন,কারণ তিনি নামজ্ঞুর করলে ৪/৫ হাজার টাকা প্লেইন ভাড়া দিয়ে হাইকোর্টে গিয়ে জামিন নিয়ে আসবে। একজন নাগরিকের সংবিধানস্বীকৃত মৌলিক অধিকার হল আইনী প্রতিকার চাওয়ার জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়ার। তিনি নাগরিকের মৌলিক অধিকার হরণ করেছেন। মহামান্য হাইকোর্টের স্বাভাবিক ক্ষমতা প্রয়োগে বাঁধা সৃষ্টি করেছেন। তিনি নিজেকে হাইকোর্টের চেয়ে ক্ষমতাশালী দেখাতে চান। অবশ্য ভিতরে ভিতরে বিশেষ ব্যবস্থায় বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে জামিন মজ্ঞুর করার অনেক অভিযোগও বিদায়ী জেলা জজের বিরুদ্ধে আছে।

আশার সংবাদ হলো বর্তমানে কক্সবাজারে কর্মরত প্রায় ২১জন বিচারকের সততা সম্পর্কে আইনজীবীদের তথা কক্সবাজার জেলাবাসীর কোন সন্দেহ নাই। নবনিযুক্ত জেলা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিনের নেতৃত্বে কক্সবাজারে আবার আইনের শাসন চালু হবে,মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায়/আদেশ/নির্দেশ/সার্কুলারকে আমলে নেওয়া হবে,সম্মান করা হবে, ইনশাল্লাহ।

লেখক : কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সাবেক পিপি এবং একাধিক বইয়ের প্রণেতা এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।